করোনা ভাইরাসের এই আবহে বর্তমানে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সবাই যখন অতিমারীতে ঘরবন্দি হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন তখন বেশ কিছু মানুষ সময় পেয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতিভাকে সকলের সামনে আরো ভালো ভাবে তুলে ধরার জন্য। শিল্প কর্মের দিকে নজর দেওয়ার সময় পাচ্ছেন অনেকে। এবারে সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে ডায়মন্ড হারবারের দরিদ্র পরিবারের একজন কলেজ পড়ুয়া নিজের নাম নথিভুক্ত করে নিল ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে।
জানা গেছে ডায়মন্ড হারবারের বছর কুড়ির কলেজ পড়ুয়া শুভেন্দু হালদার মসুর ডালের দানার উপরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ভারতের মানচিত্রের ছবি ফুটিয়ে তুলে একটা অনন্য কীর্তি তুলে ধরেছেন সকলের সামনে। কয়েক সপ্তাহ আগে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ড কর্তৃপক্ষের তরফে সেই ছাত্রের বাড়িতে সার্টিফিকেট এবং মেডেল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। শুভেন্দু স্বীকৃতি পাওয়ায় ওই কলেজ পড়ুয়ার বাড়িতে এবং তার প্রতিবেশীদের মধ্যে খুশির হাওয়া।
শুভেন্দু বাড়িতে প্রথম থেকেই আর্থিক অনটন। তার বাবা সনজিত হালদার পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি এবং মা রেখাদেবি বিড়ি বাধার কাজ করেন। তার তিন ভাইয়ের মধ্যে শুভেন্দু মেজো ভাই। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকেই তার আকার হাত বেশ ভালো। মাঝেমধ্যেই শুভেন্দু বিভিন্ন ধরনের শিল্প কর্ম নিজের হাতে তৈরি করে থাকে। কিন্তু এই করোনা আবহে লকডাউন এবং তার পরেও স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারণে সে তার শিল্পকর্ম নিয়ে একটু ভাবার সময় পেল।
অবসর সময়কে পুরোটা কাজে লাগিয়ে তার নিজের শখের কাজের ভিত্তিতে সর্বভারতীয় স্বীকৃতি ও অর্জন করে নিয়েছে শুভেন্দু। প্রথমদিকে ধান গম এমনকি ডালের উপরে ছবি আঁকার চেষ্টা করেছিলেন শুভেন্দু। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই শুভেন্দু হালদার মসুর ডালের ওপর ভারতের মানচিত্র এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতি তুলে ধরতে সক্ষম হন।
তারপর তিনি সেই সমস্ত শিল্পকর্ম সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করেন। অনেক গুণী মানুষেরা তার শিল্পকর্মের স্বীকৃতি দেন। তাদের থেকেই শুভেন্দু জানতে পারে কিভাবে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে নিজের এই শিল্প কর্ম পৌঁছাতে হয়। তার কিছুদিনের মধ্যেই ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে কর্তৃপক্ষের থেকে শুভেন্দুর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এবারে শুভেন্দুর লক্ষ্য গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নিজের নাম নথিভুক্ত করা।