জীবনযাপনস্বাস্থ্য ও ফিটনেস

জানেন কি গরুর দুধ খেলে কতটা পুষ্টি পাওয়া যায়!

Advertisement

ভারত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক, দেবপ্রিয়া সরকার : প্রতিটি মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পানীয় দুধ। সুষম পানীয় হিসেবে পরিচিত দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। তবে দুধের পুষ্টিগুণ কতটা সেটা নির্ভর করে দুধটি কিসের তার উপর। দুধ বিভিন্ন রকমের হয় তা আমরা জানি। মায়ের দুধের পাশাপাশি রয়েছে গরু ও ছাগলের দুধ। এছাড়া অনেকে আবার উটের দুধও পান করেন। প্রাণিজ দুধ ছাড়াও রয়েছে সয়া, বাদাম, নারকেলে ইত্যাদি অনেক রকমের দুধ। এই সকল প্রকার দুধের পুষ্টিগুণ আলাদা আলাদা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কোন দুধের পুষ্টিগুণ কতটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। জেনে নিন কোন দুধে পাওয়া যাবে কতটা পুষ্টি

১) গরুর দুধ:- গরুর দুধের অনেক রকম ভাগ থাকে; যেমন- (ক) সরছাড়া বা ননীতোলা গরুর দুধ (খ) স্বল্প ননীযুক্ত গরুর দুধ (গ) সরযুক্ত গরুর দুধ। এই তিন প্রকারের গুনও তিন রকম।

(ক) সরছাড়া বা ননীতোলা গরুর দুধে রয়েছে নব্বইভাগ ক্যালোরি এবং চর্বি একেবারেই নেই। এই দুধ ওজন কমাতে খুবই উপকারী।

(খ) স্বল্প ননিযুক্ত গরুর দুধে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন। এছাড়া ক্যালোরি ও চর্বির পরিমাণ থাকে দুধের ননির পরিমাণ কতটা তার উপর ভিত্তি করে। এই দুধে সামান্য পরিমাণ ক্রিম থাকে।

(গ) এক থেকে দুই বছরের শিশুদের মস্তিষ্ক তৈরির জন্য সরসহ গরুর দুধ খুবই উপকারী। এছাড়া এই দুধে উচ্চমানের চর্বি থাকায় সেটিও শিশুদের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজন। এই দুধে ক্যালরির মাত্রা থাকে প্রচুর। তাই যাদের শরীরে ক্যালরির প্রয়োজন তারা এই দুধ পান করতে পারেন।

২) সয়াবিনের দুধ:- সয়াবিনের দুধ পুষ্টির শক্তিঘর। সয়াবিন জলে ভিজিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। এক কাপ সোয়াবিনের দুধে আছে ৪৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। যাদের দুগ্ধজাত খাবারে এলার্জি তাদের জন্য সয়াবিনের দুধ উপযুক্ত। এই দুধ বাজারে কিনতে পাওয়া যায় তবে কেনার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন যে এই দুধে ভিটামিন ডি’ ও ক্যালসিয়াম আছে কিনা।

৩) ভাতের দুধ:- উচ্চ পরিমাণ কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর ভাতের দুধ। বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবারে এলার্জি থাকলে সেক্ষেত্রে ভাতের দুধ খাওয়া যেতে পারে এটি সহজে হজম হয়।

৪) চকলেট দুধ:- খুবই সুস্বাদু ও বিশেষ করে শিশুদের জন্য খুবই পছন্দের চকলেট দুধে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। এই দুধ শক্তি বাড়াতে খুবই উপকারী। ব্যায়াম করার পর এই দুধ খাওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর। চকলেট দুধে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের অনুপাত ৪:১।

৫) নারকেল দুধ:- নারকেলের দুধ সব জায়গাতেই সহজলভ্য এক কাপ নারকেলের দুধে রয়েছে ১২ গ্রাম চর্বি ও ৪ গ্রাম স্যাচুরেটেট এবং ৪৫ গ্রাম ক্যালোরি।

৬) ছাগলের দুধ:- ছাগলের দুধে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও চর্বি এবং গরুর দুধের চেয়ে ১৭০ গ্রাম বেশি ক্যালরি ও সাত গ্রাম স্যাচুরেটেট চর্বি। এক কাপ ছাগলের দুধে ৯ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। গরুর দুধ ও ছাগলের দুধের পুষ্টিগুণ প্রায় একই।

৭) বাদামের দুধ:- বাদামের দুধ সাধারণত কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম উভয়েরই হয়ে থাকে। কাঠবাদামের দুধে সাধারণত ৩০ ভাগ ক্যালরি ও ৪৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। তবে কাঁচা কাঠবাদামেও রয়েছে অনেক প্রোটিন, আঁশ ও উচ্চ মানের চর্বিসহ অনেক পুষ্টিগুণ। একমুঠো কাঁচা কাঠবাদাম খেলে কাঠবাদামের দুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
কাজুবাদামের দুধে রয়েছে সামান্য ক্যালরি ও চর্বি। এটি ক্রিমযুক্ত ফ্লেভারে ভরপুর। এককাপ মিষ্টিহীন কাজুবাদামের দুধে রয়েছে ২৫ ভাগ ক্যালরি ও দুগ্ধজাত পণ্যের চেয়ে ৫০ ভাগ বেশি ক্যালসিয়াম।

৮) ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ:- যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য দুগ্ধজাত খাবার আরো বেশি সমস্যা তৈরি করে। তাদের ক্ষেত্রে দুধ খেলে গ্যাস, পেট ফোলা ভাব ও ডায়রিয়ার সমস্যা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ তারা খেতে পারেন। ল্যাকটোজ ফ্রি দুধে গরুর দুধের মতই সমস্ত পুষ্টি রয়েছে।

Related Articles

Back to top button