আবারও নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পশ্চিম মেদিনীপুরে দলীয় সভায় থেকে তিনি বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে বলেন, প্রতিবেশী রাজ্যের ওদের ছেলেমেয়েরা যারা পড়াশোনা করছে তাদের গায়েব করে দিতে পারি। বিজেপি রাজ্য সভাপতির এরকম মন্তব্যের পর নতুন করে শুরু হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি একজন রাস্তার গুন্ডাকে ধরে এনে রাজ্য সভাপতি করে দিয়েছে।
শুক্রবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাতনে একটি জনসভা করতে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন,”আমি এখানে হরিপুরে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি, পুলিশকে কোন বুথ এর কাছে আসতে দেবো না। কেন্দ্রীয় পুলিশ এখানে আসবে। শুধুমাত্র তারাই বুথ সামলাবে। আপনাদের কারো চিন্তার কোন কারণ নেই। যদি আপনাদের কেউ ভয় দেখায় তার নামটা লিখে রাখবেন। যখন চারদিন পর ফলাফল বেরোবে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রামছাড়া করব। ভোটের সময় বিশৃংখলা করতে এলে ওদের বুকের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেব। যারা আসবে তাদের মা-বাবাকে বলে আসবো সেটা শেষ দিন তাদের। একটু পাল্টা না হলে উড়িষ্যা এবং ঝাড়খন্ড জমি কিনে দেবো সেখানে বাকি জীবন থাকতে হবে।”
এরপর দিলীপ ঘোষ বলেন,”পঞ্চায়েতের লোকজন টাকা আত্মসাৎ করে বাড়ি গাড়ি করেছেন। কিন্তু তারা এগুলি ভোগ করতে পারবেন না। বউ, ছেলে, মেয়ের মুখ দেখতে দেবো না। একথা আগেও বলেছি আজকেও বলছি। যে সমস্ত নেতারা পঞ্চায়েতের টাকা আত্মসাৎ করে গাড়ি বাড়ি করেছেন তাদের আমরা আটকাতে পারি। হাত পা কেটে রেখে দিতে পারি কিন্তু আমরা ওই রাস্তায় যাই নি। তবে মনে করবেন না, যে আমরা পারিনা। আমরা চাইলে জানুয়ারি থেকে এদেরকে সোজা করা শুরু করবো। অনেক নেতা তাদের ছেলে মেয়েকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতিবেশী রাজ্যের পড়াচ্ছে। আমরা যদি কোন ঠিকানা পাঠিয়ে দেই, তাহলে সেই ছেলে মেয়ে আর বাড়ি ফিরবে না। আমাদের এখানে ইটপাটকেল মারা হচ্ছে, আমরা ওদেরকে ওখানে তুড়ি মেরে গায়েব করে দেব। সরকারটাই দুষ্কৃতী ডাকাতকে চোরেদের সরকার হয়ে গেছে। পঞ্চায়েত থেকে পার্লামেন্ট সমস্ত নেতারা দুর্নীতিগ্রস্ত।”
এই মন্তব্যের পর বিজেপি রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে পাল্টা তোপ দেগে তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেছেন,”বিজেপি একটা রাস্তার গুন্ডাকে ধরে রাজ্য সভাপতি করে দিয়েছে। এর ফলে যা হবার তাই হয়েছে। কখনো তিনি বলছেন গুলি করে দেবো, আবার কখনো বলছেন তৃণমূলকে জানুয়ারিতে শেষ করে দেবো। আমি দীলিপবাবু কে বলতে চাই, আপনি আসলে পুরনো দিন থেকে রাজনীতি করেননি। তাই আপনি রাস্তার ভাষা ব্যবহার করছেন। আর আমরা রাস্তার ভাষা ব্যবহার করিনা। এটাই আপনার আর আমার মধ্যে তফাৎ। আমরা ভবিষ্যতের সংগ্রামের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলার ১৫টি আসনে জিতে আপনাকে বাংলা ছাড়া করবে তৃণমূল। এর জন্য আপনি তৈরি থাকুন।”