আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে একদিকে যেমন শহরে তাপমাত্রার পারদ নামছে, ঠিক অন্যদিকে বঙ্গ রাজনীতির পারদ ক্রমশ চড়ছে। নির্বাচনের আগে এখন কার্যত তৃণমূল বিজেপি দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। কেউ অন্য দলকে নির্বাচনে লড়াইয়ের মাঠে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চায় না। তৃণমূল বা বিজেপি উভয় দল তাদের সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচনের ভোট প্রচার করতে সম্মুখ সমরে মাঠে নেমে পড়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে প্রবল চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে। আর অন্যদিকে লোহা গরম আছে দেখে হাতুড়ি মারতে ভোলেনি বাংলা গেরুয়া শিবির।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে একাধিকবার একাধিক জায়গায় বক্তব্য রেখেছেন। সব বক্তব্যেই শেষ পর্যন্ত উঠে এসেছে একই কথা। তিনি বাংলার জনগণকে বোঝাতে চাইছেন, তৃণমূল কংগ্রেস দলটা আর বেশিদিন টিকবে না। সব নেতা-মন্ত্রীরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে আসবে। আসলে তৃণমূল দলে কোন ভদ্রলোক থাকতে পারে না। কিন্তু এবার তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিল।
ব্রাত্য বসু গতকাল কাঁথির ধবাবেরিয়াতে তৃণমূলের একটি সভায় যোগদান করেছিলেন। সেই সভা থেকেই বেনজির ভাবে দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “একুশের নির্বাচনের পর দিলীপ ঘোষকে আর রাজ্যে দেখা যাবে না। তাকে হয়তো আবার কোন সীমান্ত এলাকায় দেখা যাবে।” এর সাথে তিনি বিদ্রুপ করে জানিয়েছেন, “দিলীপ ঘোষকে একদিন এসে মেদিনীপুরে তৃণমূলের ঝাণ্ডা ধরতে হবে।” এছাড়াও তিনি এদিন জানিয়েছেন ধাবাবেরিয়া সভায় প্রায় সাড়ে ৬০০ বিজেপি কর্মী এসে তৃণমূলে যোগদান করেছে। তাই তিনি বলেছেন, “তৃণমূলের কিছু নেতাকর্মী হয়তো বিজেপিতে যোগদান করছে কিন্তু কোন পার্টি আসল চালিকাশক্তি বা কর্মীরা তৃণমূলে আসছে। অর্থাৎ বিজেপি আসল যারা কর্মী আছে তারাই তৃণমূলে চলে আসবে। বিজেপিতে পড়ে থাকছে শুধু মাথা, চলে আসছে ধড়।”
এছাড়া এদিনকার সভায় ব্রাত্য বসু শুভেন্দু ইস্যু নিয়ে তিনি বেশ ইতিবাচক কথা বলেছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “শুভেন্দু অধিকারী এখনো দলেই আছে। আর শুভেন্দু নিজেই বলে একজনেরই অনুগামী আমি। সে হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” এই বক্তব্য শুনে বোঝা যায় যে শুভেন্দু কোনদিন বিজেপিতে যোগদান করবে না। বাংলার গেরুয়া শিবির শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদান জল্পনা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও তিনি বিজেপি শিবিরকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপর কোন ভরসা নেই। তাইতো একদিকে যেমন বাইরে থেকে লোক আসছে আবার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে দল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে।”