বলিউডবিনোদন

রাস্তা থেকে রাজপ্রাসাদ, দত্তক নেওয়া মিঠুন-কন‍্যা দিশানীর কাহিনী

Advertisement

নব্বইয়ের দশকে সংবাদমাধ্যমের একটি খবর হইচই ফেলে দিয়েছিল চারিদিকে। একটি শিশুকন‍্যাকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল কলকাতার একটি এলাকার ডাস্টবিনে। শিশুকন‍্যাটিকে সারারাত পাহারা দিয়েছিল তিনটি দেশী কুকুর। তারা কাউকে ঘেঁষতে দেয়নি বাচ্চাটির কাছে। মায়ের মতো করে সারারাত কন্যাসন্তানটিকে আগলে রেখেছিল তারা। সকাল হতেই ঘটনাটি এলাকার বাসিন্দাদের চোখে পড়ে। তাঁরা দ্রুত পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ও এনজিও-র সহায়তায় শিশুকন‍্যাটিকে উদ্ধার করে অনাথাশ্রমে পাঠানো হয়। উদ্ধারকার্যের পরে অনাথাশ্রমে পাঠানো অবধি শিশুকন‍্যাকে চোখের আড়াল হতে দেয়নি সেই তিন মা-কুকুর। পরে যখন তারা বুঝতে পারে, শিশুটি সুরক্ষিত স্থানে পৌঁছেছে, তখন তারা নিজেরাই পুনরায় নিজেদের এলাকায় ফিরে যায়।

কিন্তু ভাগ্য শিশুটির জন্য লিখে রেখেছিল এক অদ্ভুত লিখন। সংবাদপত্রের মাধ্যমে এই খবরটি মুম্বইয়ের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun chakraborty)-র নজরে আসে। তিন পুত্রসন্তানের পিতা মিঠুন তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেন, মেয়েটিকে দত্তক নেওয়ার। তাঁর স্ত্রী যোগিতা বালি (yogita bali) তাঁর এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন। এরপর সেই বছরের 24 শে অক্টোবর কলকাতায় এসে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মিঠুন ও যোগিতা দত্তক নেন শিশুকন‍্যাটিকে, নাম দেন ‘দিশানী’ (Dishani)।

এরপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। সেদিনের দিশানী আজ রীতিমত সাবালিকা। নিউ ইয়র্ক ফিল্ম অ্যাকাডেমি থেকে ফিল্ম নিয়ে পড়াশোনা করে দিশানী বাবা মিঠুন চক্রবর্তীর অমতে পা রেখেছেন বলিউডে। কিন্তু এখনও অবধি বলিউডে দিশানীর পায়ের নিচের জমি শক্ত হয়নি। কয়েক বছর আগে করণ জোহর (karan johar)-এর ফিল্ম ‘স্টুডেন্ট অফ দি ইয়ার 2′-তে অডিশন দিয়েও রিজেক্ট হন দিশানী। তবে নিজের দাদা উস্মেয় চক্রবর্তী (ushmey chakraborty) পরিচালিত শর্ট ফিল্ম ‘হোলি স্মোক’-এর মাধ্যমে 2017 সালে নিজের অভিনয় কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দিশানী। এছাড়াও 2018 সালে ‘আন্ডারপাস’ এবং ‘সাবল এশিয়ান ডেটিং উইথ পিবিএম’-এও অভিনয় করেছেন দিশানী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দিশানী ভীষণ অ্যাকটিভ। প্রায়ই তিনি নিজের সুন্দর ছবি শেয়ার করেন নেটদুনিয়ায়। মিঠুনের মত তাঁর কন‍্যা দিশানীও সারমেয় পছন্দ করেন। স্ট্রিট ডগদের জন্য কাজ করেন দিশানী। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ হলেও অন্যান্য স্টারকিডদের মতো দিশানী কোনোদিন তাঁর সামাজিক সচেতনতামূলক কাজকর্মকে লাইন লাইমলাইটে আনতে চাননি। মিঠুন নিজে বিজেপিতে যোগদান করলেও তার প্রভাব দিশানীর উপর পড়তে দেননি। মিঠুন বরাবর চান, দিশানী সাধারণ একটি মেয়ের মতোই নিজেকে গড়ে তুলুন। প্রকৃতপক্ষে মিঠুন-পুত্র মহাক্ষয় (Mahakshay) ওরফে মিমো (Mimo chakraborty) তাঁর নারীসক্তির কারণে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন। মিঠুন যেহেতু নিজে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে, তাই মিমোকে তিনি কোনোদিন সমর্থন করেননি। তবে যোগিতা বরাবর মিমোকে সমর্থন করেছেন। ফলে মিঠুনের সবচেয়ে কাছের হয়ে উঠেছেন নমশি (Namashee), উস্মেয় ও দিশানী। দিশানী নিজের কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নমশিও বলিউডে তাঁর কেরিয়ার তৈরী করতে চান। উস্মেয় ফিচার ফিল্ম পরিচালনা করতে চান। নমশি, দিশানী এবং উস্মেয় তাঁদের বড় দাদা মিমোকে পছন্দ না করলেও জনসমক্ষে তাঁকে অপমান করতে চান না বলে বিভিন্ন ছবিতে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায়। কিন্তু দিশানী কোনোদিন মিমোকে সমর্থন করেননি।

Related Articles

Back to top button