শ্রেয়া চ্যাটার্জি – পোস্ত খেতে কে না ভালোবাসে। ঘটি, বাঙাল সকলেরই পছন্দ পোস্ত। আলু পোস্ত, পেঁয়াজ পোস্ত, ঝিঙে পোস্ত কিংবা গরম ভাতে প্রথম পাতে পোস্তবাটা, সরষের তেল, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে। জিভে জল আসছে তো! আজকে আমাদের রেসিপি ‘ডিম পোস্ত’। যেটি রান্না করা ভীষণ সহজ। খেতেও অসাধারণ।
তবে পোস্ত দানার ব্যবহার কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টালে খুঁজে পাওয়া। ব্রোঞ্জ যুগে মিনোয়ান সভ্যতায় পোস্ত দানা চাষ করা হতো। বাচ্চাদের কে শান্ত করার জন্য দুধ, আফিম এবং মধুর মিশ্রণ তাদের খাওয়ানো হতো। মিনোয়ান সভ্যতা খ্রিস্টপূর্ব ২৭০০ থেকে ১৪৫০ পর্যন্ত। তবে সুমেরিয়ান সভ্যতার পোস্ত চাষ করার কথা ইতিহাসে জানা যায়। সাধারণত ঘুমের ঔষধ হিসেবে পোস্ত ব্যবহার করা হতো। শোনা যায়, সম্রাট আকবরের নির্দেশে বাংলাতে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পোস্ত চাষ। মুঘল রান্না ঘরে পোস্তর ব্যবহার অনেকটাই বেশি ছিল, বিশেষত ঝাল ঝোল কে থকথকে বানাতে পোস্তর জুড়ি মেলা ভার ছিল। এ তো গেল মুঘল যুগের কথা, ব্রিটিশ যুগেও গ্রামকে গ্রাম বাংলায় চাষ হত পোস্ত। এখন এর দাম অনেকটাই বেশি, তবে আগেকার দিনে কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষের খাদ্য তালিকা থাকতো পান্তা ভাত, আলু সিদ্ধ আর পোস্ত বাটা এবং পোস্তর বড়া। পোস্ত খাওয়া শরীরের জন্য খুবই ভালো। পোস্ত দানা পুষ্টিগুণে একেবারে ভরা। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, খনিজ লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশ। আজকে আমাদের রেসিপি ‘ডিম পোস্ত’। চলুন জেনে নিই রেসিপি
উপকরণঃ সেদ্ধ ডিম, পেঁয়াজ কুচি, টমেটো কুচি, আদা বাটা, হলুদ গুঁড়ো, কাঁচালঙ্কা বাটা, পোস্ত বাটা, নুন, মিষ্টি, সরষের তেল, নারকেল বাটা, ধনেপাতা কুচি।
প্রণালীঃ কড়াইতে প্রথমে তেল গরম করতে হবে, ডিমগুলি হালকা ভেজে তুলে নিতে হবে। ডিমগুলি ভাজার আগে ডিমের গায়ে একটু হলুদ আর অল্প একটু চিনি মাখিয়ে নিলে ডিমগুলি বেশ লাল হয়। গরম তেলের মধ্যে পেঁয়াজ বাটা, টমেটো কুচি, আদা বাটা দিয়ে ভালো করে কষতে হবে, কষা হয়ে গেলে হলুদ গুঁড়ো, নুন, মিষ্টি স্বাদমতো দিয়ে ভালো করে কষতে হবে। কষা হয়ে গেলে, পোস্ত বাটা, নারকেল কোরা, কাঁচা লঙ্কা কুচি দিয়ে অল্প একটু গরম জল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। নামানোর আগে ওপরে ধনেপাতা কুচি, উপর থেকে একটু সরষের তেল ছড়িয়ে দিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ‘ডিম পোস্ত’।