নির্বাচনী কোপে মমতার সরকারি প্রকল্প, বন্ধ হচ্ছে “চোখের আলো” প্রকল্প
ভোটের দিন ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারের "চোখের আলো" প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে
একুশের বিধানসভা নির্বাচন ঘাসফুল শিবিরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবারে তাদের প্রতিদ্বন্দী বিজেপি বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। এই কথা ভেবেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনের প্রাক্কালে বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প শুরু করেছিলেন এবং রাজ্য বাজেটে রীতিমতো বাংলার মানুষের জন্য কল্পতরু হয়ে উঠেছিলেন। নির্বাচন প্রাক্কালে জনমুখী প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল “চোখের আলো” প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যবাসীরা চক্ষু চিকিৎসা করাতে পারতো। কিন্তু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই নির্বাচন কমিশন কোপ দিল মমতার এই প্রকল্পে।
ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারপরই প্রথমে রাজ্য সরকারি প্রকল্প “চোখের আলো” বন্ধ করার নির্দেশ দিল তারা। যতদিন না নির্বাচন যাবে ততদিন এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করতে পারবে না কেউ। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৪ জানুয়ারি নবান্ন থেকে চোখের আলো প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রকল্প অনুযায়ী, রাজ্যের সমস্ত নাগরিক বিনা খরচায় তাদের চোখের চিকিৎসা করাতে পারতো। এছাড়া এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে চোখের ছানি কাটা বা বিনামূল্যে চশমা দেওয়া হত। রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুর এলাকায় এই চক্ষু চিকিৎসা শিবির এত দিন চলছিল। আগামী আরও ৩ মাস এই শিবির চলার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে নির্বাচনের আগেই এই প্রকল্প বন্ধ করে দিতে হলো।
গত ৪ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোখের আলো প্রকল্প ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন, “রাজ্যের বয়স্ক মানুষের পাশাপাশি সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করবে চিকিৎসকরা। প্রয়োজন হলে তাদের বিনামূল্যে চশমা অবধি দেওয়া হবে। এমনকি সরকারি স্কুল ছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের চক্ষু পরীক্ষা হবে।” জানা গিয়েছে প্রকল্প ঘোষনার মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন প্রায় আড়াই লক্ষ বাংলার মানুষ। এই প্রকল্প বিশেষত বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় বেশ সাফল্য পেয়েছেন। বাংলার ৫২৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ৮৫ টি পুর এলাকায় এই প্রকল্প জমিয়ে চলেছে। তবে বাংলার মানুষ কিছুদিনের জন্য সুবিধা পেলেও এখন নির্বাচন কমিশনের কোপে বন্ধ হতে চলেছে এই সরকারি প্রকল্প।