ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। সেই অতীত ঐতিহ্য কে আবারো ফিরে আনার প্রচেষ্টা করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এবারের ইশতেহারে তারা প্রকাশ করে দিয়েছে, এবারে বাংলার জন্য তারা হতে চলেছে একেবারে কল্পতরু। শুধুমাত্র শহর কলকাতার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি বরাদ্দ করল ২২ হাজার কোটি টাকা। তার সঙ্গে বিজেপি ম্যানিফেস্টো সোনার বাংলা সংকল্প পত্র প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা হয়ে গেল তাদের বেশকিছু নতুন কর্মসূচির।
কলকাতা যে সমস্ত জায়গায় এখনও যানজট হয় সেরকম ১০টি জায়গা চিহ্নিত করে তৈরি করা হবে বহুতল পার্কিং। এছাড়াও যাতে ইউনেস্কো হেরিটেজ শহরের তকমা কলকাতা পায় তার জন্য খরচ করা হবে ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণা করেছেন, কলকাতাকে ঢেলে সাজানোর জন্য এবারে তারা মেট্রোর সম্প্রসারণ করতে চলেছেন। তিনি জানিয়েছেন কলকাতার সঙ্গে জেলার জনসংযোগ আরো বাড়ানোর জন্য তৈরি করা হবে আরো বেশি মেট্রো স্টেশন। হুগলি শ্রীরামপুর, হাওড়ার ধুলাগর এবং নদীয়ার কল্যাণী পর্যন্ত মেট্রো চলে যাবে।
এ ছাড়াও বেশকিছু ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কলকাতা হবে আর্থিক পরিষেবা প্রধান কেন্দ্র এবং প্রতি বাড়িতে সব সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে যাবে। তাছাড়া প্রতিটি বাড়িতে অগ্নি নিরক্ষা করা হবে বলে অমিত শাহের আশ্বাস। তিনি ঘোষণা করেছেন পার্কিংয়ের সুবিধার জন্য সমস্ত ভারী যানজট অঞ্চলে বহুতল পার্কিং তৈরি করা হবে। বায়ু দূষণ প্রতিরোধে ১০টি স্মগ টাওয়ার তৈরি করা হবে।
স্বচ্ছ কলকাতা মিশন চালু করার জন্য ১,৫০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হবে। কালীঘাটের আদিগঙ্গা নদীর অতীত গৌরব ফেরাতে নর্দমা এবং আবর্জনা পরিস্কার করে ফেলা হবে খুব তাড়াতাড়ি। শ্রীরামপুর, ধুলাগর এবং কল্যাণী পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো সম্প্রসারণ করা হবে। ইউনেস্কো হেরিটেজ সিটির মর্যাদা পাওয়ার জন্য কলকাতায় খরচ করা হবে ৫০০ কোটি টাকা।
এটা অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয়টি কোন ভারতীয় জনতা পার্টি এবারে বিদ্যুতের ওপর বিশেষ নজর দিয়েছে। কলকাতা এবং শহরতলীর ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ পরিষেবা কিছুটা হলেও সমস্যার। আগের থেকে পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হলেও শহরতলী অঞ্চলে এখনো লোডশেডিং এর সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যাকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি ঘোষণা করে দিয়েছে, যদি বিজেপি সরকার পশ্চিমবাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে প্রতিটি বাড়িতে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে যাবে। অন্যদিকে বামেরা ঘোষণা করেছিল তারা ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে ব্যবহার করার সুযোগ দেবে। ২০০ ইউনিট পর্যন্ত থাকবে ভর্তুকি। তাদের থেকে একধাপ এগিয়ে বিজেপি ঘোষণা করল ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ পর্যন্ত বাংলার মানুষকে কোন খরচ দিতেই হবে না। ইশতেহার প্রকাশের পর গেরুয়া শিবিরের একজন নেতা বলেছেন, “শুধু রং নয়, আন্তর্জাতিক শহর হিসেবে কলকাতাকে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির। এর মাধ্যমে কলকাতার হৃতগৌরব ফিরে আসবে এবং সোনার বাংলা গঠিত হতে পারবে।”