গত ২৭ শে জুন রাত দুটো নাগাদ জম্মু এয়ারফোর্স স্টেশনে বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় ভারতীয় ২ জন সেনা জখম হওয়ার পাশাপশি এয়ার ট্রাফিক সিগনাল বিল্ডিংয়ের পাশের একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় গোটা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে , রাত প্রায় দুটো নাগাদ বিমানবন্দরের টেকনিকাল এরিয়ায় পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি রাত ১ টা ২৭ মিনিটে ও দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি রাত ১ টা ৩২ মিনিটে ঘটিত হয়। এই দুটি বিস্ফোরণ ড্রোনের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এ এন আই সূত্রে খবর। এরপর ঘটনাস্থলে ফরেনসিক টিম ও বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড পৌঁছে যায়। এই বিস্ফোরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউ এ পি এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এই ঘটনার পরবর্তীতে কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধূরী কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে বলেন , ” মোদি সরকারের ব্যর্থতাতেই উপত্যকায় জঙ্গি হামলা হচ্ছে “। শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি কেন্দ্রীয় সরকার যে দিয়েছিল তা ধরে রাখতে পারেনি বলেও এদিন কটাক্ষ করেন কংগ্রেস সাংসদ।
এই ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে মতামত নেওয়ার জন্য ভারতবার্তা প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিল মাননীয় জয় ব্যানার্জীর সঙ্গে। তিনি তাঁর মতামত আমাদের ভারত বার্তা প্রতিনিধিকে জানান।
জম্মু এয়ারফোর্স স্টেশনে যে বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটলো , যেখানে পাক যোগের একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে চীনের আগ্রাসন মনোভাবকে কেন্দ্র করে সীমান্তে পারদ চড়তে দেখা গেছে। একদিকে করোনা পরিস্থিতির ধাক্কা ভারতের ওপর এসেছে , সেই মুহূর্তে দাড়িয়ে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কোন চক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করেন ?
জয় ব্যানার্জী : ভারতের ওপর কোন চাপ – চাপই নয়। ভারতবর্ষ এখন কোন চাপকে চাপ বলে মনে করে না কারণ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নাম নরেন্দ্র মোদি।এই চাপ যখন বিগতকালে এসেছিল তখন প্রধানমন্ত্রী , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়তো , হালে পানি পেত না। আমাদের যে সরকার চলছে মাননীয় নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন , এগুলো ছোট পিপড়ে মারার মত ঘটনা বলে মনে করি। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে , যবে থেকে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করিয়েছি। ভারতবর্ষ পাশে না দাড়ালে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হত না , অত্যাচার কমতো না। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে বাংলাদেশ হয়েছে সেহেতু পাকিস্তানের সমস্ত লোকেরা , নাগরিক , রাজনৈতিক সবাই মরণপণ প্রতিজ্ঞা করেছে ভারত থেকে কাশ্মীরকে যতক্ষণ না আমরা আলাদা করতে পারবো , বাংলাকে আলাদা করতে পারবো ততক্ষন শান্তি নেই। এইজন্য যদি গ্রামেও কোনো ঘটনা ঘটে যেমন মালদাতে আসিফের যে ঘটনা ঘটেছে প্রথমে যেমন মনে হয়েছিলো পারিবারিক ঘটনা কিন্তু আস্তে আস্তে দেখা যেতে লাগলো এখানেও পাক যোগ। সেইখানে কাশ্মীরে যে ড্রোন অ্যাটাক হয়েছে সেখানে পাক যোগ থাকা স্বাভাবিক। ওরা ওইটুকুই পেছন থেকে এসে দুম দারাক্কা করতে পারে। এর থেকে বেশি করতে পারে না। তবে এটাও অনেকাংশে মোদি সরকার কমিয়ে দিয়েছে।
এই ঘটনার পরবর্তীতে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরি সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেন যে , মোদি সরকারের ব্যর্থতাতেই উপত্যকায় জঙ্গি হামলা হচ্ছে। কী প্রতিক্রিয়া দিতে চাইবেন ?
জয় ব্যানার্জী : অধীর চৌধুরী অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ। আমি ওনাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি , শ্রদ্ধা করি ও একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে উনি আমার আদর্শ। এক একেকটা কমপালসনে এক একেকটা বিবৃতি দিতে হয়। অধীর চৌধুরি বিভিন্ন বক্তব্যে , বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে উনি মোদিজী ও এই সরকারের প্রশংসা করেছেন। সেটার কোন তুলনা নেই হয়ত এই জায়গাটা কোন চাপ ছিল। সেইজন্য উনি হয়ত এই কথা বলেছেন !
আমরা ২৬/১১ দেখেছি , উরি দেখেছি। তার পরিবর্তে জবাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছি কিন্তু সবার মনে একটাই প্রশ্ন যে , এই সন্ত্রাসবাদকে চিরতরে কবে নির্মূল করা যাবে ?
জয় ব্যানার্জী : সন্ত্রাসবাদ তো শুধু আমাদের এখানকার ঘটনা নয় , সন্ত্রাসবাদ সারা পৃথিবীতে হচ্ছে। আমেরিকা বিশ্বের শক্তিশালী দেশ সেখানেও সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে , ইউরোপেও হচ্ছে। ঘনঘন হচ্ছে। ভারতবর্ষে একটা সময় মুড়ি মুড়কির মত সন্ত্রাসবাদ হতো সেটা এখন বড় বড় কান্ট্রিতে হচ্ছে। বরং ভারতবর্ষে রেশিও অনেক কমে গেছে। সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করা খুব ডিফিকাল্ট সারা পৃথিবী থেকে। ভারতবর্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদ অলমোস্ট নির্মূল হয়ে গেছে। আর খুব শিগগিরি হয়ে যাবে কারণ আপনারা দেখেছেন যে কাশ্মীর নিয়ে খুব সুন্দর একটি মিটিং হয়েছে , মোস্ট ওয়েলকাম মিটিং হয়েছে। আমরা ওখানে ছিলাম না কিন্তু ফটো দেখলে বুঝতে পারি বিভিন্ন দলের নেতারা , কাশ্মীরের নেতারা , আমাদের দলের নেতারা যারা ছিলেন প্রত্যেকেরই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এটাই বলছে একটা শান্তিপূর্ন মিটিং হয়েছে ও ইলেকশনের দিকে এগোচ্ছে। তাই আমার মনে হয় খুব শীঘ্র সন্ত্রাসবাদ কেটে যাবে।
[সাক্ষাৎকার গ্রহণ : প্রীতম দাস ]