গত ১ লা নভেম্বর কল্যাণীর গয়েশপুরে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মৃত ব্যক্তির নাম বিজয় শীল (৩৫)। তার বাড়ি থেকে অনতিদূরে আমবাগান থেকে ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। এরপর সেই ব্যাক্তির রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চাপান উতোর সৃষ্টি হয় বিজেপি – তৃণমূলের মধ্যে। বিজেপি তরফে যেমন দাবি করা হয় মৃত ব্যক্তি তাদের দলের কর্মী ছিলেন তেমনি তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় যে সেই ব্যক্তি তাদের সমর্থক ছিলেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কল্যাণী থানার পুলিশ।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মতামত দেবার জন্য ভারত বার্তা প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিল মাননীয় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ( Khagen Murmu ) সঙ্গে। তিনি এই ব্যাপারে তার মতামত আমাদের ভারত বার্তার প্রতিনিধিকে জানান।
১) গয়েশপুর কাণ্ডে বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলা হয় , বিজেপি শকুনের মতো লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কি বলতে চাইবেন এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ?
খগেন মুর্মু : তৃণমূলকে এটা জিজ্ঞেস করবেন যে , এই সময়ের মধ্যে আমাদের ৩-৪ সপ্তাহে কুড়ি জন খুন হয়েছে। দুই বছরে একশো কুড়ি জনের অধিক খুন হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী। এরা খুন হওয়ার সাথে সাথে তারপরে তাদেরকে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে যে তারা আত্মহত্যা করছে।তৃণমূল কংগ্রেস পুরোপুরিভাবে ভারতীয় জনতা পার্টিকে এইভাবে আমাদের নেতা-কর্মী , জনপ্রতিনিধি দের করে তারপর তাদের ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে ও তারপর বলা হচ্ছে রাজনীতি হচ্ছে ? গয়েশপুরে যেটা হলো তিনি আমাদের সেখানকার যুব মোর্চার লিডার। কি করে বললেন লাশ খুঁজে বেড়ানো হচ্ছে ?সত্যি সত্যি যারা আত্মহত্যা করে তার পা টা কখনোই মাটিতে ঠেকে না। তো উপুড় হয়ে সেখানে হাঁটু গেড়ে আছে , সেটা কি আত্মহত্যা ? এটা বিশ্বাস করবো ? যা ঘটনা ঘটাচ্ছে মেরে ফেলে তারপর তাদেরকে ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে ও বলা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছে !
২) তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক শিলভদ্র দত্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন যে , সম্মানহানি করে রাজনীতি হয় না। তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়াবো না। ফলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন ? তার এই মন্তব্য নিয়ে কি প্রতিক্রিয়া দিতে চাইবেন ?
খগেন মুর্মু : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি সবকা সাথ , সবকা বিকাশ মন্ত্রে দেশের ১৩০ কোটি মানুষের সেবা করছেন। ফলে সমস্ত মানুষ এখন বিজেপি মুখী হচ্ছে। পশ্চিমবাংলাতে এই সাড়ে নয়- দশ বছর ধরে যেভাবে এখানে সমস্ত রকমের বঞ্চনার যে রাজনীতি চলছে এবং এখানে খুনের রাজনীতি চলছে , সন্ত্রাসের রাজনীতি চলছে । এই রাজনীতি থেকে মানুষ সরে দাঁড়াতে চাইছে , সবাই মুক্তির পথ খুঁজছে , সবার মুক্তি চাই। আজকে যেভাবে সারা পশ্চিম বাংলাতে বিরোধীরা যেভাবে আক্রান্ত , তৃণমূলের অন্দরেও আক্রমণ চলছে। দেখবেন যে তৃণমূল – তৃণমূলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে। খুন হলে কোনো খুনিদের শাস্তি হচ্ছে না। যেমন এখানে তোলাবাজি বহাল তবিয়তে চলছে , এখানে সমস্ত ক্ষেত্রে লুট বহাল তবিয়তে চলছে। সমস্ত ক্ষেত্রে এখানে খুন , বিরোধীদের খুন করা হচ্ছে এবং তৃণমূলের মধ্যেও খুন হচ্ছে। সেই খুনিদের তাদের কোন বিচার নেই। খুনির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেই। আজকে তৃণমূল ও তৃণমূলের বিরোধী যারা আছে তারাও আজকে আশ্রয়স্থল খুঁজছে। সমস্ত মানুষ মনে করছে একমাত্র ভরসার দল হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ভারতীয় জনতা পার্টি লড়াই করছে , প্রতিবাদ করছে , সংগ্রাম করছে। তারা খুনও হচ্ছে। দেখবেন বহু মিথ্যা মামলা আছে। প্রতিদিন খুন হচ্ছে , প্রতিদিন মিথ্যে মামলা জড়ানো হচ্ছে কিন্তু তা সত্বেও ভারতীয় জনতা পার্টি রাস্তাতে আছে , প্রতিবাদে নামছে। বিজেপি একমাত্র রাস্তাতে আছে এবং তারা বিরোধিতাও করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের যে সমস্ত যারা যারা ভাল মানুষ তারা তৃণমূলের সবকিছুকে মেনে নিতে পারছেন না। তৃণমূলের এই সমস্ত তোলাবাজি , সন্ত্রাস এটাকে তারা মেনে নিতে পারছেন না। তাই তারা ভাবছে একমাত্র আশ্রয়স্থল ভারতীয় জনতা পার্টি। আমি জানিনা শিলভদ্র বাবু বিজেপিতে আসবেন কিনা সেটা ওনার ব্যাপার কিন্তু প্রতিবাদ করছেন। আমি ধন্যবাদ জানাবো। সৎ সাহসের সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের এই সমস্ত অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন , সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাবো। শিলভদ্র বাবু এখানে আসবেন কিনা সেটা ওনার ব্যাপার , কোথায় যাবেন , কোন দলে থাকবেন সেটা তার ব্যাপার কিন্তু প্রতিবাদ করছেন তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি , কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাকে।
[সাক্ষাৎকার গ্রহণ : প্রীতম দাস ]