মমতা ব্যানার্জি একমাত্র নেত্রী যিনি ডিফিটিং জবাব দিতে পারে বিজেপিকে : শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়
আগামী দিন পশ্চিমবাংলায় বিজেপি থাকবে না। কারণ বিজেপির কোন উন্নয়ন কর্মসূচি নেই। বিজেপির কর্মসূচি হলো সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মধ্য দিয়ে ভোট যুদ্ধে জয়ী হওয়া।
বিধানসভা উপনির্বাচনে সমস্ত বিরোধী দলকে পরাজিত করে আবারো একবার জোড়া ফুলের ব্যাপক জয় দেখতে পাওয়া গেলো। এই উপনির্বাচনের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই 72 শতাংশ ভোট পেয়ে প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রায় 58 হাজার ভোটে পরাজিত করলেন। এদিন ভবানীপুরে সকাল থেকেই তৃনমূল কর্মী সমর্থকরা সবুজ আবিরে মেতে উঠেছিলেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তৃণমূল নেত্রীর জয়ের ব্যবধান ক্রমশ বাড়তে থাকে। গণনা শেষে দেখা যায় বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল প্রায় 22 শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন প্রায় 92 হাজার ও সামশেরগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম 26 হাজার ভোটে জিতে জয়যুক্ত হলেন।
উপনির্বাচনের 3 কেন্দ্রে বিপুল জয় এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য আমাদের প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিলেন মাননীয় মন্ত্রী শ্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সাথে। তিনি তার ব্যক্তিগত মতামত ও প্রতিক্রিয়া আমাদের ভারত বার্তার প্রতিনিধিকে জানান।
১) ভবানীপুরে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপক জয় আর অন্যদিকে বিজেপির শোচনীয় পরাজয়। কি প্রতিক্রিয়া দিতে চাইবেন ?
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় : এই জয় আমাদের প্রত্যাশিত ছিল এবং আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল যে এই জয়ের ব্যবধান টা কতটা বাড়ানো যায়। সেই মার্জিন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যা ছিল তার ডবল মার্জিনের থেকে বেশি মার্জিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ী হয়েছেন। দুটো জিনিস প্রমাণ করলো তা হলো , বিজেপির সমস্ত ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার , ইডি দিয়ে ভয় দেখানো , ইডি দিয়ে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে ডেকে পাঠানো ও ভুল – মিথ্যা অপপ্রচার সেই সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে মানুষ বিপুলভাবে রায় দিয়েছেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রকল্পগুলি করেছেন সেই প্রকল্পগুলি মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। তাই জন্য মানুষ উজার করে লক্ষীর ভান্ডারে , প্রত্যেকটা বাড়ির বউয়েরা – মায়েরা – বোনেরা লক্ষীর ভান্ডারের সদস্য হয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড পাচ্ছে। কৃষকরা 6000 টাকার বদলে বছরের 10,000 টাকা পাচ্ছে। এমনি করে তিনি সব সময় মানুষের মন জয় করতে পেরেছেন এটা প্রমাণিত হয়েছে।
২) যে ভবানীপুর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেকর্ড ভোটে জিতলেন সেখানে বিজেপি ভবানীপুরের একটা ওয়ার্ডেও জিততে পারল না। তাহলে কি বিজেপিও বাম কংগ্রেসের মতো শূন্য হওয়ার পথে এক প্রকার যাত্রা শুরু করলো ?
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় : একদম তাই। আগামী দিন পশ্চিমবাংলায় বিজেপি থাকবে না। কারণ বিজেপির কোন উন্নয়ন কর্মসূচি নেই। বিজেপির কর্মসূচি হলো সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মধ্য দিয়ে ভোট যুদ্ধে জয়ী হওয়া। এটা মানুষকে আলটিমেটলি স্পর্শ করে না। ধর্ম মানুষের আবেগ , ধর্ম মানুষের ভক্তি কিন্তু ধর্ম মানুষের পেট ভরায় না। স্বাভাবিকভাবে এই সত্য মানুষ উপলব্ধি করতে পারছে বলেই আস্তে আস্তে সরে আসছে , সরে আসবে।
৩) 2024 সালে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা আরো কতটা বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলেন আজকের পর ?
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র নেত্রী ভারতবর্ষে যিনি ডিফিটিং জবাব দিতে পারে বিজেপিকে , ডিফিটিং ওয়েতে হারাতে পারে বিজেপিকে। সেটা আজকে ভারতবর্ষে এস্টাবলিশড হয়ে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা বিরোধী মুখ এইখানে বিজেপিকে ভোটে সিধ করতে পেরেছে।
[সাক্ষাৎকার গ্রহন : প্রীতম দাস ]