নয়াদিল্লি: :লালকেল্লাকাণ্ডে (Red Fort) বিদেশী অর্থের যোগ, ধৃত ব্যক্তির থেকে তথ্য পেয়ে তদন্তে এনআইএ (NIA)। প্রজাতন্ত্র দিবসে (Republic Day) লালকেল্লায় কৃষক আন্দোলনকে ঘিরে ছড়ানো হিংসার পেছনে রয়েছে বিদেশী অর্থের মদত। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ধৃত দুই চক্রীর থেকে। আজ, বৃহস্পতিবার (Thursday) রাজ্যসভায় কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে, কোনও কৃষককে (Farners) ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে না জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে স্বরাস্ত্রমন্ত্রক সুত্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, দিল্লী পুলিশের (Delhi Police) তদন্তে উঠে আসা এই বিদেশী অর্থ যোগের সূত্র নিয়ে গভীরে তদন্ত করবে এনআইএ।
প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় গত কাল গ্রেফতার হয়েছেন দীপ সিধু। পুলিশের দাবি, তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে, দেশে অশান্তি ছড়ানোর জন্য বিদেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাঠানো হচ্ছে। দিল্লি পুলিশ আজ ইকবাল সিংহ নামে লালকেল্লায় তাণ্ডবের আর এক চক্রান্তকারীকে গ্রেফতার করেছে। ইকবালকে ধরিয়ে দেওয়া জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসে অশান্তি ছড়ানোর পিছনে অন্যতম চক্রী যে ইকবাল, সে সম্পর্কে তারা নিশ্চিত। ইকবাল সে দিন গণ্ডগোল ছড়ানোর জন্য মানুষকে উস্কানি দিয়েছেন, তার একাধিক ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসেছে।
তার একটিতে দেখা গিয়েছে, দিল্লির লাহৌর গেটের কাছে জমায়েত হওয়া কৃষকদের লালকেল্লায় ঢোকার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন ইকবাল।ইকবালকে আদালতে পেশ করা হলে তাঁকে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সংবাদমাধ্যমের কাছে ইকবাল দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। হিংসা ছড়াতে দিল্লি আসেনি। সে দিন লালকেল্লায় যাওয়ারও কোনও পরিকল্পনা তাঁর ছিল না। কিন্তু এক বার পৌঁছে যাওয়ার পরে আবেগতাড়িত হয়ে কিছু লাইভ ভিডিয়ো প্রচার করেছিলেন।
তবে কাউকে প্ররোচিত করেননি। পুলিশের পাল্টা দাবি, সে দিন লালকেল্লায় ঝামেলার পিছনে অন্যতম দুই মাথা ছিলেন দীপ সিধু ও ইকবাল। দু’জনেই গ্রেফতার হওয়ায় এ বার তাদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার কথা ভাবছেন তদন্তকারীরা। এছাড়া অর্থের সূত্র খুঁজতে বিদেশ থেকে আসা অর্থের উৎস জানতে পঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কিছু ব্যক্তি ও ‘লোক ভালাই ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র প্রেসিডেন্ট বলদেব সিংহ সিরসা-সহ কুড়ি জনকে ডেকে পাঠিয়েছে এনআইএ।
কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়া আন্দোলনকারীদের এনআইএ তদন্তের স্বার্থে ডেকে পাঠাচ্ছে কি না, তা জানতে চেয়ে রাজ্যসভায় প্রশ্ন করেছিলেন কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ। জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি আজ জানান, আন্দোলনকারীদের ডেকে এনআইএ তদন্ত করছে না। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়, কৃষক আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে নিষিদ্ধ খলিস্তানি সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) ভারতে নাশকতা ও ঝামেলা পাকানোর তালে রয়েছে। তার জন্য বিদেশ থেকে বেআইনি ভাবে বিভিন্ন সংগঠনকে টাকা পাঠানো হচ্ছে। কৃষক আন্দোলনকে সামনে রেখে আসলে ভারতে অশান্তি সৃষ্টি করাই প্রধান লক্ষ্য এসএফজে-এর।
যেহেতু খলিস্তানি শক্তি ভারতে অশান্তি ছড়াতে তৎপর রয়েছে, তাই বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য কী কারণে এসেছে, তা জানার অধিকার তদন্তকারী সংস্থার রয়েছে। লালকেল্লায় অশান্তি ছড়ানোর জন্য ইকবালও বিদেশ থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন দেখার এই তদন্ত কোন দিকে গড়ায়।














