রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রবিবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন কোনোভাবে মেনে নিতে পারেননি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই নিয়ে তিনি মুখও খুলেছিলেন। মঙ্গলবার এবার শুভেন্দু অধিকারীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নিজের দলকেই খোঁচা মারলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। শ্রীরামপুরে কালীপুজোর উদ্বোধনে এসেছিলেন কল্যাণ। সেখানেই দলবদল নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। এবার হয়তো নিন্দুকেরা বলবে, ভূতের মুখে রাম নাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নাহ্, ভেবে চিন্তেই আদতে ‘ঝি’কে মেরে বৌকে শিক্ষা’ দেওয়ার কৌশলী পন্থা অবলম্বন করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ।
মঙ্গলবার নিজের কেন্দ্র শ্রীরামপুরে একটি কালী পুজোর উদ্বোধনে এসেছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আর সেখামে নেতাকে ঘিরে ছিলেন তাঁর দলীয় কর্মীরা৷ সকলকে চমকে দিয়ে সেখানেই আচমকা কল্যাণ বলে ওঠেন, ‘শুভেন্দু রাগ করিস না ভাই! অনেক কথা বলে ফেলেছি!’’ নেতার মুখে এহেন ‘বচন’ শুনে কর্মীদের চক্ষু চড়কগাছ। সকলে একে অপরেরপরস্পরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে তাঁরা ভাবতে থাকেন ঠিক শুনছেন তো!
এখানেই শেষ নয় এইদিন বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে কল্যাণ বলেন, ‘‘কখন কোনওদিন তুইও চলে আসবি, তার তো কোনও ঠিক নেই। যাদের যাদের সম্বন্ধে সমালোচনা করেছিলাম, তাদের সবাইকে বলছি কেউ রাগ করিস না। তখন তোরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিলি। তাই বলেছিলাম। আবার কবে কোনদিন চলে এসে আমার চেয়ে তৃণমূলের বেশি কাছের হয়ে যাবি!” তবে কল্যাণ বাবুর এহেন মন্তব্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি এই বার্তা শুভেন্দু নয় দলবদলু প্রসঙ্গে ঘুরিয়ে দলের নেতাদেরই অন্যভাবে বার্তা দেওয়ার প্রচেষ্টা। অনেকে আবার ‘ঝি-কে মেরে বৌকে শিক্ষা দেওয়া’র প্রবাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
এদিন আবার গানে গানেও তৃণমূলের সকল ‘দলবদলু’দের কটাক্ষ করে গান ও বেঁধেছেন কল্যাণ। তাঁর কথায়,”আমি সব পারেতেই আছি গাঙের জলে ভাসিয়ে দিয়ে ডিঙা…এপার-ওপার কোন পাড়ে জানি না। আমি দুই নদীতেই নাচি। তৃণমূলেও নাচছি, বিজেপিতেও নাচছি।” উল্লেখ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে মুকুল বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল, এরপর বাবুল দল ছেড়ে এই ঘাসফুলে নাম লেখালো সর্বশেষে রাজীব ব্যনার্জি। আর তাতেই বেশ ক্ষুব্ধ দলের অন্দরের লোকেরা।