গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পরেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন সঙ্গীত জগতের অন্যতম নক্ষত্র বাপ্পি লাহিড়ী। চলতি মাসেই সঙ্গীত জগত হারালো তাদের তিন নক্ষত্রকে। লতা মঙ্গেসকরের শোক কাটতে না কাটতেই আরও দুই রত্নকে হারালো ইন্ডাস্ট্রি। বুধবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে গায়কের। তাঁর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন সাধারণ থেকে তারকা সকলেই। সম্প্রতি গায়কের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে কিছু কথা বললেন শান্তনু মৈত্র।
সম্প্রতি ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার শান্তনু মৈত্র আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ভীষণরকম প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। তিনি হইহই করে থাকতে ভালবাসতেন। পরপর তিন নক্ষত্র পতনে ভীষণভাবে শোক পেয়েছেন শান্তনু মৈত্র নিজেও।
তিনি জানিয়েছেন, খুব কাছ থেকে গায়ককে চিনতেন তিনি। তিনি গান গাইলেই চারিদিকে থাকতো অনেক বাদ্যযন্ত্র আর একরাশ প্রাণশক্তি। তার কথায়, তার বানানো সমস্ত গান শুনতেন তিনি। খারাপ লাগলে হালকা ভাবে বুঝিয়ে দিতেন। অন্যদিকে ভাল লাগলে বলতেন, বাড়িতে আসার কথা, জমিয়ে খাওয়া-দাওয়ার কথা।
তিনি আরো বলেন, বাপ্পি লাহিড়ীর গানের সুরে পা মেলাতে গিয়ে নতুন ডান্স স্টেপ আবিষ্কার করে ফেলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। ‘নমকহালাল’ ছবির ‘পাগ ঘুঙরু বান্ধ’ গানের দৃশ্যটাই তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
এরপরই তিনি বলেন, বাপ্পি লাহিড়ী না থাকলে মিঠুন চক্রবর্তীকে কেউ আবিষ্কার করতে পারতেন না। ‘আই অ্যাম এ ডিস্কো ডান্সার’, বা ‘ইয়াদ আ রহা হ্যায় তেরা প্যায়ার’ তার অন্যতম উদাহরণ। বাপ্পি লাহিড়ীর গানের হাত ধরেই মিঠুন চক্রবর্তী বলিউডের মিঠুনদা হয়ে উঠেছিলেন, তা বলাই বাহুল্য। এমনকি তিনি এও জানান, সবসময় নতুন প্রতিভাদের সামনে এগিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগী ছিলেন তিনি।
টলিউড থেকে বলিউড রীতিমতো দাপিয়ে বেড়িয়েছেন গায়ক। প্রতিমুহূর্তে নতুন নতুন সৃষ্টি করেছেন তিনি। আরতি মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধহয়’ গানটি মানানসই হবে তা বাপ্পি লাহিড়ী ছাড়া আর কারোর মাথাতেই আসেনি, এ কথা জানালেন শান্তনু মৈত্র নিজেই। তার চলে যাওয়া যে এক অপূরণীয় ক্ষতি, তা নিঃসন্দেহে বলা চলে।