শ্রেয়া চ্যাটার্জি – এক বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণী হল চশমা পরা হনুমান। না, তবে এই হনুমান সত্যি সত্যি চশমা পরে না, দেখে অনেকটা যেন মনে হয় চশমা পরে আছে। ক্রমাগত বন-জঙ্গল কাটার ফলে বাসস্থান খাদ্যদ্রব্যের অভাবে এই প্রাণীটি বিলুপ্ত প্রায় হতে বসেছে। এদের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী বন বিশেষ করে লাউয়াছড়া, রেমা-কালেঙ্গা, সাতছড়ি, পাবলাখালী, কাপ্তাইয়ের বনে এই চশমা পরা হনুমান দেখা যায়। এরা পরিবেশের উপকারী প্রাণী। 47% গাছের পাতা এবং 14% ফল খায়। ফল খাওয়ার পরে এদিক-ওদিক সেই ফলের বীজ ছড়িয়ে দেয় যা নতুন গাছের জন্ম দিতে সাহায্য করে।
গাছের পাতা ফল ছাড়াও এরা পাখির ডিম, কীটপতঙ্গ ইত্যাদি খায়। এরা দল বেঁধে চলাফেরা করলেও সহসা এদের চোখে পড়ে না। একটি দলে বাচ্চা সহ সাত আটটি হনুমান থাকতে পারে। পুরুষ হনুমান একটি থাকে, সেই পুরুষ হনুমান পুরো দলটিকে নেতৃত্ব দেয়। তবে দলে কোন পুরুষ হনুমান দলপতি হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন হয়ে উঠলে, বিদ্যমান পুরুষ দলনেতা অনেক সময় নেতৃত্ব বজায় রাখতে মা হনুমানকে দ্রুত ঋতুমতী করার জন্য বাচ্চাদের মেরে ফেলে।
এই হনুমান সাধারণত লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে, সহজে গাছ থেকে মাটিতে নামে না। গায়ে রং মেটে বাদামী থেকে কালচে বাদামী, পেট আর বুক এর রং সাদা। চোখের চারপাশে সাদা রংয়ের থাকে, বলে মনে হয় যেন সে চশমা পড়ে আছে। মুখের রং সাদা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হনুমানের মাথায় বেশ বড় বড় লোম আছে দেখে মনে হয় যেন পরচুল পড়ে আছে। তবে এসব বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীদের বাঁচানো একান্ত প্রয়োজন। তারা বাঁচলে পুরো জীবজগতের বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকবে।