ভারত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক, প্রিয়া দাস : মধুর ব্যবহার শুধু আজকে না, এটি চলে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। মধু আমরা পাই মৌচাক থেকে। আজ থেকে প্রায় ৪৪০ বছর আগে কায়রোতে মৌমাছি পালনের কথা জানা গেছে। শুধু কায়রোতে না, মধুর ব্যবহার চলে আসছে আরো অনেক দেশে। মিশর, গ্ৰিস, চিন, রোম ইত্যাদি দেশে মধুকে ব্যবহার করা হয় নানা কাজে।
মধু একটি মিষ্টি খাদ্য। চিনির বদলে মধু খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে শুধু খাওয়াতেই নয় এর গুনাগুন আরো অনেক ক্ষেত্রেই। জেনে নিন মধুর উপকারিতা বিষয়ে:-
১) মধুতে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: উচ্চমানের মধুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। মধুর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের নানা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, এমনকি ক্যান্সারের সম্ভাবনাকেও কমায়।
২) পোড়া বা ক্ষত স্থানের জন্য উপকারী: প্রাচীনকালে পোড়া বা ক্ষতস্থান সারানোর জন্য মধু ব্যবহার করা হতো। অনেক গবেষণা করে দেখা গেছে মধু পোড়া বা ক্ষত স্থানে লাগালে ৪৩% লাভ হয়।
৩) কাশি ভালো করতে মধু: কাশির সমস্যা দূর করতে মধু অত্যন্ত উপকারী। কাশির ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে কিন্তু মধুতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। কাশির ওষুধের চেয়েও মধু ভালো কাজ দেয়। তবে মধু এক বছরের কম বয়সী শিশুদের না দেওয়াই ভালো।
কাশির সমস্যার জন্য একমগ ফোটানো জলে অর্ধেক লেবুর রস দিয়ে তার মধ্যে ১ থেকে ২ চামচ মধু মিশিয়ে সেই জল পান করলে কাশির সমস্যা দূর হবে।
৪) মধুতে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে: মৌমাছি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে তা মৌচাকে জমা করে রাখে। এই মৌচাক থেকেই আমরা মধু পাই। মধুতে কোনো ফ্যাট, ফাইবার বা প্রোটিন থাকে না। মধুর মধ্যে থাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বায়ো একটিভ প্লান্ট কম্পাউন্ড।
৫) কোলেস্টেরল এর উন্নতি করে: মধু শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলকে বাড়াতে সাহায্য করে।
৬) চুলের জন্য মধু: মধু চুলের সমস্যায় কার্যকরী। মধুর সাথে জল মিশিয়ে মাথায় ভালোভাবে মাখলে চুল পড়া, খুশকি ইত্যাদি কমতে পারে।
৭) ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য মধু: মধু খারাপ কোলেস্টেরল কে কমালেও রক্তে সুগারের মাত্রা কে কমাতে পারে না। তবে চিনির চেয়ে মধু কিছুটা ভালো হতে পারে। তবুও আজকাল বাজারে মধুর সাথে চিনি মিশিয়ে ভেজাল মধু বিক্রি করা হয়। তাই সাবধানে খাওয়া উচিত।
৮) ঘুমের উন্নতি করতে পারে: ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। একজন মানুষের প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। তবে অনেকেরই রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয়। তাদের জন্য মধু খুব উপকারী। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেলে ঘুম আসবে তাড়াতাড়ি।
৯) ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে পারে: রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়লে হৃদপিন্ডের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে মধু খেলে ট্রাই গ্লিসারাইড এর লেভেল অনেক কম থাকে।
১০) ব্লাড প্রেসার কমাতে পারে: মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্লাড প্রেসার কমাতে সাহায্য করে।
তবে আমাদের মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কোনো জিনিসই ভালো না। মধুর উপকারিতা আছে বলে তা অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেলাও বিপদজনক হতে পারে। কারণ এতে ক্যালরি ও সুগারের মাত্রা বেশি থাকে।