হরমোন হল এমন একটি জৈব-রাসায়নিক তরল যা শরীরের কোনো বিশেষ এন্ডোক্রাইন গ্রন্থি থেকে নিষ্কৃতি হয় এবং রক্তরস বা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় উৎপত্তিস্থল থেকে দূরে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংস প্রাপ্ত হয় তাদের হরমোন বলে। হরমোন কথার অর্থ হল ‘জাগ্রত করা’ বা ‘উত্তেজিত করা’। আমাদের জীবনে হরমোনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, যেমন ঘুম, পরিপাক, মেজাজ, প্রজনন চিক্র নিয়ন্ত্রনে। এ ছাড়াও নারী দেহে পেরিয়ডস ও মেনোপজের জন্যে মাসে ও জীবনে এই হরমোনের মাত্রা বৃদি ও কমার একটি চক্র থাকে, যদি এই চক্রের কোনো বাঁধা, বা ভুল ঘটে তার সরাসরি প্রভাব, প্রজনন, গর্ভাবস্থা, পিরিয়ডিক সাইকেল বা মেনোপজের সময় বোঝা যায়।
হরমোনাল ইমব্যালেন্স অথবা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বললে আমরা বুঝি যখন কোনো হরমোনের মাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি হয় বা কমে যায়, সেই হরমোন দ্বারা করা কাজের মধ্যে অস্বাভাবিকতা নজরে আসে আমাদের শরীরে। জীবনের বিভিন্ন বয়সে হরমোনের মাত্রা আলাদা হয়। কিন্তু ওষুধ, চিকিৎসা, বা শারীরিক কিছু কারণেও আমাদের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা কষ্টকর হয়ে পরে, একই বলা হয় হরমোনাল ইমব্যালেন্স ডাক্তারি ভাষায়।
লক্ষণ:-
মেজাজের পরিবর্তন, ঘুমের নিয়মের পরিবর্তন, অনিদ্রা, হমজের গোলমাল, ক্লান্ত লাগা, স্মৃতি শক্তির হ্রাস পাওয়া, হরমোনের ভারসাম্যহীনতার পরিচয় দিয়ে যায়।
মন বিজ্ঞানীরা বলেন হরমোনের সমস্যা উপেক্ষা করা খুব বড়ো ভুল হয়ে দাঁড়াতে পারে আগামী জীবনে। এর জন্যে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যেতে পারে, এরা শরীরে কর্টিসলের মাত্রা বাড়াতে কাজ করেন তাই। অতিরিক্ত ঘুম, স্ট্রেস, চিনি যুক্ত বেশি খাবার থেকে হতে পারে এমন সমস্যাগুলো।
হরমোনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে, প্রকৃত খাবার, সাগ- সবজির সেবন, সুস্থ ঘুমের অভ্যেস, নিয়মিত ব্যায়াম, ও সময়ে খাবার খাওয়া অভ্যেস মেনে চলতে হবে। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন, এবং এর জন্যে নিয়মিত মেডিটেশন করুন, ও শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পরিণাম মত জল পান করুন। এই সু – অভ্যেস গুলোর জন্যে আপনার হরমোনের ব্যালান্স ঠিক থাকবে ও আপনি একটি সুস্থ জীবন – যাপন করতে সক্ষম হবেন।