কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপিতে যোগদান করেন তৃণমূল বিদ্রোহী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপর থেকেই শুভেন্দু ও শাসকদলের মধ্যে দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। একদিকে শুভেন্দু যেমন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, ঠিক অন্যদিকে শুভেন্দুকে “বিশ্বাসঘাতক” বা “মীরজাফর” আখ্যা দিচ্ছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বরা। এরইমধ্যে তৃণমূল ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছেন, “শুভেন্দু বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির সাথে যোগাযোগ রাখছে। সেই কথা বুঝতে পেরেই দল তার থেকে কিছু সাংগঠনিক শক্তি কেড়ে নিয়েছিল।” আজ অর্থাৎ শনিবার পিকের কথার ভিত মজবুত করল মুকুল রায়ের বক্তব্য।
আজ অর্থাৎ শনিবার বিজেপির হেস্টিংস এর কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত বৈঠক ও সংবর্ধনা কর্মসূচি ছিল। তাতে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। সেই সভাতেই মুকুল রায়ের বক্তব্য মাটি খুড়তে কেচো থেকে বার করে আনে। মুকুল রায় তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলে ফেলেন, “আমি যখন থেকে পুরনো দল ছেড়ে ছিলাম তখন থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ুক।” এদিন তিনি বলেছেন, “আমাকে বিজেপিতে যোগ দিতে প্রভাবিত করেছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও শিবপ্রকাশবাবু। আমি মাত্র ৪ বছরেই বিজেপির সাথে মিশে গিয়েছি। যখন আমি দল ছেড়েছিলাম তখনই শুভেন্দুকে বলেছিলাম, অসম্মানিত হয়ে তৃণমূলে আর থাকিস না।”
মুকুল রায়ের বক্তব্য শুনে স্পষ্ট বিজেপির সাথে দীর্ঘ সম্পর্ক শুভেন্দু অধিকারীর। ৪ বছর আগে মুকুল রায় যখন দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিল তখন শুভেন্দুর ভালোই সম্পর্ক ছিল মুকুলের সাথে। এমনকি মুকুল রায় তখন বলেছিলেন, “বিজেপিতে চলে আয়। ভয় পাচ্ছিস জানি। কিন্তু তৈরি হয়ে যা তুই খুব তাড়াতাড়ি বিজেপিতে আসবি।” এছাড়াও শুভেন্দুকে তৃণমূল নেতারা বিশ্বাসঘাতক বলায় তার বিরুদ্ধে সুর তুলেছেন মুকুল রায়। তিনি বলেছেন, “এখন তৃণমূল নেতারা মঞ্চ বেদে যেসব বিশ্বাসঘাতকতার কথা বলছে তা তাদের মুখে মানায় না। আমি আজ বলছি লিখে রাখুন, এরাজ্যে টিএমসির অবস্থা কিছুদিনের মধ্যে বর্তমানে কংগ্রেসের মতো হবে।”
এছাড়া এদিন সভায় নব্য বিজেপিতে যুক্ত হওয়া নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুকুল রায়। তিনি বলেছেন, “বিজেপি অন্য দল থেকে আসা সৈনিকদের সম্মান করতে জানে। আমি নিজেই তৃণমূল থেকে এখানে এসেছি। কিন্তু বিজেপি আমাকে এখন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বানিয়েছে। দল আপনাকে ঠিক গ্রহণ করে নেবে। দলের ওপর আস্থা রাখুন এবং দলকে ভরসা করুন। সেই সাথে আগামী নির্বাচনে তৃণমূল সরাতেই হবে, এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে কঠিন পরিশ্রম করুন।”