স্ত্রীর দল পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের পর নিমেষের মধ্যে তাকে বিবাহ বিচ্ছেদ দিতে চলেছেন বিজেপি সংসদ সৌমিত্র খাঁ। সুজাতা যখনই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন তখনই সৌমিত্র সাংবাদিক বৈঠক করে তার বিবাহ বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্যদিকে সুজাতার কি পরিস্থিতি তা জানতে চেয়ে অনেকে তাকে প্রশ্ন করেছেন। দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গীর এই ঘোষণার পর শুধুমাত্র সুজাতা নয়, গোটা রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত বিস্মিত। সুজাতা জানিয়েছেন, স্ত্রীকে ডিভোর্স দেবার জন্য বিজেপি সৌমিত্রকে চাপ দিচ্ছে। সুজাতার বক্তব্য,”স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে কোন টিএমসি বিজেপি আসতে পারে না। জানিনা কারা তোমায় আমাকে বিচ্ছেদের বুদ্ধি দিচ্ছে।” পাশাপাশি তিনি স্বামী ছেড়ে যাবার পরেও তিনি চিরকাল সৌমিত্রর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় বহন করবেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জন্য মুহুর্তের মধ্যে এতদিনের সঙ্গীকে ডিভোর্স দিয়ে দেওয়া যায় এই কথা তার মাথায় আসেনি সেটা বোঝা যাচ্ছিল। তাই ধাক্কাটা সামলাতে বেশ অনেকটা সময় লেগেছিল সুজাতার। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় অনেক চেষ্টা করলেও তিনি কান্না চাপতে পারলেন না। তিনি বলে উঠলেন,”আমি সৌমিত্রর নামে সিঁদুর পড়েছি। আগামী দিনেও পরবো। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তৈরি হয় স্বর্গে। সেই স্বর্গের গড়ে তোলা সম্পর্ক মর্তের কোন রাজনৈতিক দল কি ভেঙে দিতে পারে? কেউ আমাদের সম্পর্ক ভাঙতে পারবেনা।”
তিনি আরো বলেছেন,”আজও আমি সৌমিত্রকে ভালবাসি। ওর নামে সিঁদুর, নোয়া পরেছি। এ সমস্ত জিনিস আজীবন আমার সঙ্গে থাকবে।” এবার সৌমিত্র র প্রতি তার বার্তা,”ওর ভালো হোক। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ও যেন মুখ্যমন্ত্রী হয়। ওর এই আত্মত্যাগ যেনো বিজেপি না ভোলে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন,”ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, আসা করি যেন কোনো বিপদ না হয়। তবুও ভবিষ্যতে সৌমিত্রর বিপদে আগে রক্ত দেবে সুজাতা। হয়তো আমি ওর পথের কাঁটা হয়ে যাচ্ছিলাম, যা কোনদিনও হইনি পরেও হবো না। তাই আমাকে বাদ দিয়ে যদি গগনচুম্বী সাফল্য ও পায়, তাহলে আমি আমার আত্মত্যাগ সার্থক মনে করব।” তবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জন্য সরাসরি দাম্পত্য সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার নজির হয়তো বঙ্গ রাজনীতিতে এর আগে কোনদিন আসেনি। তাই এই নিয়ে বর্তমানে বেশ বিস্মিত রাজনৈতিক মহল।