একুশে নির্বাচনের আগে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি পুরোদমে ভোট প্রচারের উদ্দেশ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জায়গায় জায়গায় জনসভা শুরু করে দিয়েছেন। আজকে সকালে ছিল তার বনগায় কর্মসূচি। রোজের মতো তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব নিয়ে চলছিল জনসভা। তবে হঠাৎই কেন্দ্রের লাঞ্ছনার কথা উল্লেখ করতে করতে অভিমানী হয়ে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের কাছে বকেয়া ৮৫ হাজার কোটি টাকা পায়। রাজ্যের হাতে একদম টাকা নেই। তা সত্ত্বেও একের পর এক কাজ করার চেষ্টা করছি। এত উন্নয়ন করার পর আক্রমণ করলে সেটা মেনে নেওয়া যায় না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ জনসভায় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি সাফ ভাষায় জানিয়েছেন, “রাজ্য কেন্দ্রের থেকে ৮৫ হাজার কোটি টাকা পাবে। এক টাকাও কেন্দ্র দিচ্ছে না। টাকা দেওয়া তো দূরে চলছে দৈনন্দিন লাঞ্ছনা। জিএসটির একটা টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। রাজ্যকে অনেক কষ্ট করে সরকার চালাতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করে রাজ্যের উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি।” তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানান, “৮ বছরে এমন কাজের নজির পৃথিবীর আর কোথাও দেখতে পারবেন নাকি দেখে নিন?” সেইসাথে অভিমানী হয়ে পড়েছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজ্যের সমস্ত সামাজিক প্রকল্প গুলি আর্থিক অনটনে থাকা সত্ত্বেও চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে জানিয়েছেন, “জানেন কন্যাশ্রী তে কত টাকা লাগে? হিসেব আছে? রাজ্যে ৭০ লক্ষ মেয়েদের স্কলারশিপ দেওয়া হয়। আড়াই কোটি সংখ্যালঘু স্কলারশিপ পায়। এছাড়া ৭০ লক্ষ তপশিলি আদিবাসীরা স্কলারশিপ পায়। এছাড়া ৭২ লক্ষ কৃষক পরিবার রাজ্য সরকার থেকে সাহায্য পাচ্ছে। এছাড়াও রাজ্যে চলছে একাধিক সরকারি প্রকল্প। যার মাধ্যমে উপকৃত হয় রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু এত কিছু করার টাকা আসবে কোথা থেকে?” বাসের ভাড়া বাড়ানো যায় না, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যায় না, সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় না, বিনা পয়সায় খাদ্য, স্বাস্থ্য, পড়াশোনা, জুতো, টেস্ট পেপার, মিড ডে মিল সব পাওয়া যায়, কিন্তু অভিযোগ আছে উন্নয়ন হচ্ছে না।
এদিন খানিকটা অভিমানী সুরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “যতটা সম্ভব এখান থেকে ওখান থেকে জোগাড় করে উন্নয়ন করার চেষ্টা করি। আজকে খোলা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম আমার মত কেউ কাজ করে দেখাতে পারলে, একদিনের মধ্যে ইস্তফা দেব। কাজেই আমাকে দুঃখ দেবেন না। দুঃখ দিলে অভিমানের সাথে আমি সরে যেতে পারি। গত ৮ বছরে আমি রাজ্যে যে উন্নয়ন করেছে তা পৃথিবীর অন্য কোথাও কেউ করেছে নাকি দেখাতে পারবেন। আমার রাজ্যে ১০ কোটির মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি লোক সরকারি সুবিধা পেয়েছে।”