শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কর্ণাটকের এক বাসিন্দা সম্প্রতি বাড়িতে টেলিভিশন কিনবেন বলে নিজের মঙ্গলসূত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। মা হয়ে তিনি চেয়েছেন তার সন্তান যেন শিক্ষিত হয়। অনলাইন ক্লাসের সুবিধার জন্য তিনি টিভি কিনেছেন। এই ঘটনাটি থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে, করোনা ভাইরাস মানুষের দারিদ্রতাকে আরো কতটা বাড়িয়ে তুলেছে। কর্নাটকের গাদাগ জেলার রাদ্দের নাগানুর অঞ্চলের কস্তুরী নামের এই নারী, তার স্বামীর সঙ্গে কনস্ট্রাকশন শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। তার কন্যার নবম শ্রেণীতে পড়ে এবং ছেলে পড়ে সপ্তম শ্রেণীতে।
করোনা ভাইরাসের আবহে তার সন্তানরা যাতে টেলিভিশনের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখতে পারেন সেই জন্যই সে তার মঙ্গলসূত্র ২০,০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এতদিন পর্যন্ত তারা প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে তাদের টিভিতে অনুষ্ঠান গুলি দেখতেন। কিন্তু ওই একই সময়ে প্রতিবেশীরা টিভির অন্য অনুষ্ঠান দেখার কারণে তাদের টিভিতে টেলিকাস্ট হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস মিস করতে হয়। তাই কোন রকম উপায় না দেখে কস্তুরী তার মঙ্গল সূত্রটি বিক্রি করে একটি টিভি কিনে ফেলেন।
টেলিভিশনের চন্দনা চ্যানেলে সরকারি স্কুলের তরফ থেকে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। করোনা ভাইরাসের আবহে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার জন্যই এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সরকারি তরফ থেকে। ২০,০০০ টাকায় মঙ্গলসূত্র টি বিক্রি করে কস্তুরী ১৪,০০০ টাকা দিয়ে একটি টিভি কিনেছেন, আর বাকি টাকাটা সংসারের প্রয়োজনে খরচ হয়ে গেছে। ঘটনাটি শুনে ডিস্ট্রিক্ট ইনচার্জ সিসি পাটেল জানিয়েছেন কস্তুরীকে সরকার থেকে সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে। চিফ মিনিস্টার এবং জে.ডি.এস লিডার এইচ.ডি কুমারস্বামী জানান, “এই ঘটনাটি প্রমাণ করছে যে এই মহামারী সময় কিভাবে দরিদ্র মা-বাবারা ক্রমাগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন।” কস্তুরী যার কাছে গয়নাটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন, তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাকে গয়নাটি ফেরত দিয়ে দেবেন। তিনি যখন জানতে পারেন যে তিনি কি কারনে গয়না বিক্রি করে দেন, তারপরই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন।