দেশের রেল ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। শীঘ্রই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের পর ভারতের ট্র্যাকে চলবে উচ্চ-গতির ট্রেন। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংসদে জানান, ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি চেন্নাই এবং বিএমএল-এর সহযোগিতায় নতুন এই হাই-স্পিড ট্রেনগুলি ডিজাইন ও তৈরি করা হচ্ছে। এসব ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ২৮০ কিলোমিটার, যা ট্রেনযাত্রীদের জন্য এক বড় ধরনের সুবিধা এনে দেবে। অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও বলেন, “মেক ইন ইন্ডিয়া” উদ্যোগের আওতায়, বন্দে ভারত ট্রেনের সাফল্যের পর ভারতীয় রেলওয়ে এখন উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই হাই-স্পিড ট্রেনগুলির ডিজাইন ও উৎপাদন শুরু করেছে।
২৮ কোটি খরচে তৈরি হচ্ছে হাই স্পিড ট্রেন
এই হাইস্পিড ট্রেনগুলির বিশেষত্বও উল্লেখযোগ্য। এগুলির ডিজাইন হবে অত্যন্ত আধুনিক এবং প্রযুক্তি নির্ভর, যার মধ্যে থাকবে এরোডাইনামিক বডি, হাই-স্পিড অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রপালশন সিস্টেম, এবং ট্রেনের ওজন অপ্টিমাইজেশন। এছাড়া, এসব ট্রেনের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে আধুনিক HVAC সিস্টেম, যাতে যাত্রীদের আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করা যায়। ট্রেনের বডি হবে এয়ারটাইট, যা অধিক গতিতে চলতে সহায়ক। নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা, অগ্নি নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি এবং যাত্রীদের সুবিধার্থে মোবাইল চার্জিং পয়েন্টও থাকবে। এছাড়া, এসব ট্রেনের অভ্যন্তরে থাকবে স্বয়ংক্রিয় দরজা, সিল করা গ্যাংওয়ে এবং উন্নত আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সংসদে রেলমন্ত্রী জানান যে প্রতিটি ট্রেন সেট তৈরির খরচ হবে প্রায় ২৮ কোটি টাকা (কর ছাড়া), যা অন্যান্য আন্তর্জাতিক ট্রেনের তুলনায় অত্যন্ত সাশ্রয়ী।
কাজ চলছে সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণের
একই দিনে রেলমন্ত্রী মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাই-স্পিড রেল প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই প্রকল্পের আওতায় মুম্বাই ও আহমেদাবাদ সংযুক্ত করার জন্য নির্মিত হবে বিশ্বের অন্যতম দ্রুততম ট্রেন ব্যবস্থা। এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ১৩৮৯.৫ হেক্টর জমি। এছাড়া, ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেকশনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে পিয়ার ফাউন্ডেশন, পিয়ার নির্মাণ এবং গার্ডার ঢালাইয়ের কাজও অন্তর্ভুক্ত। এমনকি, সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাই-স্পিড রেল প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে এটি ৫০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে এবং এতে মুম্বাই, থানে, ভিরার, বোইসার, ভাপি, বিলিমোরা, সুরাট, ভরুচ, ভাদোদরা, আনন্দ, আহমেদাবাদ এবং সবরমতি—এই ১২টি শহর ও স্টেশন যুক্ত হবে।