ট্রেনে ক্যাটারিং যাতে নিরাপত্তা বা অন্যান্য সুবিধায় কোন বদল আনা হয়নি, কিন্তু তবুও রেলের নিয়ম অনুযায়ী গড়ে ৫৬ কিলোমিটার বেগে চলা ট্রেনগুলিকে সময় সারণিতে সুপারফাস্ট হিসেবে দাবি করা হয়েছে। আর সেই কারণেই নতুন তকমা লেগেছে কয়েকটি ট্রেনের গায়ে। আর তার প্রভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে ভাড়া। যাত্রীদের অভিযোগ স্রেফ সুপারফাস্ট তকমা দিয়ে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় রেলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন যাত্রীরা।
এই মুহূর্তে দেশজুড়ে ১৩০টি মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনকে সুপারফাস্ট স্তরে উন্নীত করার কাজ শুরু করেছে ভারতীয় রেলওয়ে। সেই সঙ্গেই এই ট্রেনের বিভিন্ন শ্রেণীর ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। ট্রেনের এসি ১, এক্সিকিউটিভ ক্লাসে যাত্রী প্রতি ভাড়া ৭৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসি ২,৩ ও চেয়ার কারে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৫ টাকা করে এবং স্লিপার ক্লাসে যাত্রী প্রতি ৩০ টাকা করে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সাথে পিএনআর বুকিং এর ক্ষেত্রে যাত্রীদের এসি ১ এ ৪৫০ টাকা, এসি ২ তে ২৭০ টাকা এবং এসি ৩ ও স্লিপার ক্লাসে ১৮০ টাকা অতিরিক্ত পেমেন্ট করতে হবে বলে জানাচ্ছে ভারতীয় রেলওয়ে। গত এক অক্টোবর থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ট্রেনের ক্যাটারিং কিংবা যাত্রী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোন অতিরিক্ত পরিবর্তন করা হয়নি। শুধুমাত্র গড়ে ৫৬ কিলোমিটার গতিবেগে চলা ট্রেনের গায়ে superfast তকমা লাগানো হয়েছে। সেই কারণেই বিভিন্ন ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় রেল গত ৪৫ বছর ধরে প্রায় একই গতিতে ট্রেন চালিয়ে চলেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ৪ দশকে মেইল এক্সপ্রেস ট্রেনের গড় গতিবেগ ৫০ থেকে ৫৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টাতে আটকে আছে।
তবে রাজধানী শতাব্দী এবং দুরন্তর মত ট্রেনের গড় গতিবেগ ৭০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। দুঃখের বিষয় হলো ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ট্রেন এখনো সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। কেবলমাত্র ৬০ শতাংশ ট্রেন ১৫ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে পৌঁছায়। তাই এই পরিস্থিতিতে, পরিষেবায় কোন উন্নতি না ঘটিয়ে এইভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করা ভারতীয় রেলের ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।