ভারতের বুকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম রেল। ভারতের রেলওয়ে নেটওয়ার্ক এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে ছোটখাটো গ্রাম থেকে শুরু করে বড় বড় শহরতলী এই রেল পরিষেবার মাধ্যমে যুক্ত হয়। তাই সাধারণ মানুষের প্রথম চয়েজ ভারতীয় রেল। আপনি যদি এই রেলের পরিষেবা নিয়ে থাকেন তাহলে একটা বিষয় অবশ্যই জানবেন যে এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট পাওয়া খুব একটা সহজ নয়। ট্রেনের কনফার্ম টিকিট না পেলে তৎকাল টিকিট কেটে বা রিজার্ভেশন কনফার্ম হওয়ার অপেক্ষা করেন সাধারণ মানুষ। তবে রেলওয়ে বিভিন্ন নতুন ধরনের প্রযুক্তি আনছে যাতে ট্রেনের টিকিট কনফার্ম হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পাবে।
ট্রেনে কনফার্ম রিজার্ভেশন না পাওয়া গেলে প্রায় প্রত্যেকেই ওয়েটিং লিস্টের টিকিট কেটে রাখেন এবং টিকিট কনফার্ম হওয়ার অপেক্ষা করেন। অনেকে আবার স্পেশাল কোটায় টিকিট বুক করে থাকেন। আপনি রেলওয়ে সংরক্ষণে ব্যবহৃত কোটা থেকে একটি নিশ্চিত টিকিট পেতে পারেন। কিন্তু, অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, কোটা শুধুমাত্র ভিভিআইপি, নেতা ও মন্ত্রীদের জন্য। সাধারণ মানুষের জন্য এমন কোনো কোটা নেই। কিন্তু, তা নয়, রেলের এমন অনেক কোটা আছে, যা সাধারণ মানুষও ব্যবহার করতে পারে এবং নিশ্চিত টিকিট পেতে পারে। আজকের এই প্রতিবেদনে এমন কিছু কোটার কথা আপনাদের জানাবো যাতে আপনি নিশ্চিত টিকিট পেতে পারেন।
১) সিনিয়র সিটিজেন কোটা:
৬০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ যাত্রী বা ৫৮ বছরের বেশি বয়সী মহিলা যাত্রীদের সিনিয়র সিটিজেন কোটা দেওয়া হয়। এই কোটার জন্য যাত্রীকে তার বার্থ সার্টিফিকেট বা সিনিয়র সিটিজেন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
২) উচ্চ অফিসিয়াল বা সদর দপ্তর কোটা:
এই কোটায় টিকিট পান রেলওয়ের কর্মকর্তা, আমলা, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ভিআইপিরা। এতে টিকিট কাটতে সংশ্লিষ্ট পদে থাকার প্রমাণ দিতে হবে। এছাড়া এই কোটায় ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভিস ব্যবস্থা রয়েছে।
৩) ডিউটি পাস কোটা:
রেলের কর্মচারী অন ডিউটি ভ্রমণ করলে এই কোটায় টিকিট পাবেন। এতে ওই কর্মচারীর পরিচয়পত্র ও অন ডিউটি প্রুফ লাগবে।
৪) প্রতিরক্ষা কোটা:
সেনাবাহিনী (নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং সেনাবাহিনী), সিআরপিএফ বা ভারতীয় প্রতিরক্ষা পরিষেবার বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এই কোটা পান। এটি পেতে ডিফেন্স আইডি প্রুফ এবং নম্বর বা ওয়ারেন্ট বা ফর্ম ডি দিতে হবে।
৫) প্রতিবন্ধী কোটা:
৪০ শতাংশ বা তার বেশি প্রতিবন্ধী মানুষদের এই কোটায় টিকিট দেওয়া হয়। এতে রেলওয়ে দ্বারা জারি করা প্রতিবন্ধী শংসাপত্র জমা দিতে হয়। এই কোটার ট্রেনে প্রতি বগিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ন্যূনতম ২টি আসন রয়েছে। এই কোটায় টিকিট বুক করার জন্য ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কম ভাড়া নেওয়া হয়।
৬) যুব কোটা:
১৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে বেকার ব্যক্তিদের জন্য এই বিশেষ কোটা। এতে টিকিট পেতে জন্ম শংসাপত্র, এনআরইজিএ বা সরকারি কর্মসংস্থান এক্সচেঞ্জ থেকে জারি করা শংসাপত্র জমা দিতে হয়। এই কোটা নিয়ে যুব এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের অনেক রুটে চলছে।
৭) বিদেশী পর্যটক কোটা:
বিদেশ থেকে আগত লোকদের এই কোটা দেওয়া হয়। এই টিকিট পাওয়ার জন্য তাদের দেশের পাসপোর্ট, ভিসা ও আইডি প্রুফ দেখাতে হয়।