ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে যাত্রীদের অনেক ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়, কিন্তু আজ আমরা আপনাকে এমন একটি ট্রেনের কথা বলব, যেটিতে আপনি বিনামূল্যে ভ্রমণ করতে পারবেন। অর্থাৎ এই ট্রেনে সফর করতে আপনাকে কোনো টাকা দিয়েই হবেনা। এই ট্রেনটি গত ৭৪ বছর ধরে মানুষকে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ করে দিচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, খুব কম লোকই এই ট্রেনটির সম্পর্কে জানে। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, এটি কোন ট্রেন এবং কোন রুটে আপনি এই ট্রেনের মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারবেন।
এই ট্রেনের নাম ‘ভাগড়া-নাঙ্গল ট্রেন’। এই ট্রেনটি পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশের সীমান্তে চলাচল করে। এই ট্রেনটি ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ড দ্বারা নাঙ্গল এবং ভাকরার মধ্যে চালানো হয়। আপনারও যদি ভাকরা-নাঙ্গল বাঁধ দেখার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে আপনি এই ট্রেনে বিনামূল্যে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।
ভারতীয় রেলওয়ের ওয়েবসাইট অনুসারে, এই ট্রেনটি ১৯৪৮ সালে চালু হয়েছিল। যখন ভাকরা নাঙ্গল বাঁধ তৈরি হচ্ছিল, সেই সময় এই ট্রেন চালানোর প্রয়োজন ছিল। ভাকরা-নাঙ্গল ট্রেন শিবালিক পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ১৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। তবে এই ট্রেন কিন্তু বিদ্যুৎ চালিত ট্রেন না, বরং ডিজেল চালিত ট্রেন। এই ট্রেনটি প্রতি ঘন্টায় ১৮ থেকে ২০ লিটার ডিজেল খরচ করে। তবে, এই ট্রেনে বেশি মানুষ যাতায়াত করেন না। এই ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ যাত্রী যাতায়াত করে। এই ট্রেনে যাত্রার সময় পথে অনেক ছোট ছোট গ্রাম আছে যেখানে মানুষ যাতায়াত করে। এছাড়াও এই ট্রেনে করে সরকারি ও বেসরকারি অফিসের কর্মচারী, পর্যটক ও স্কুল ছাত্ররাও যাতায়াত করে।
আগেই বলেছি, এই ট্রেন ডিজেল ইঞ্জিনে চলে। এই ট্রেন চালাতে একদিনে ৫০ লিটার ডিজেল খরচ হয়। একবার এর ইঞ্জিন চালু হলে, ভাকরা থেকে ফিরে আসার পরই এটি বন্ধ হয়ে যায়। এর ভেতরে বসার জন্য কাঠের বেঞ্চও রয়েছে। এই ট্রেনের মাধ্যমে আশেপাশের ভাকড়া, বরমালা, ওলিন্দা, নেহলা, ভাকরা, হান্দোলা, স্বামীপুর, খেদাবাগ, কালাকুন্ড, নাঙ্গল, সলঙ্গদী, লিডকোট, জগৎখানা, পারোয়া, চুগাঠি, তালওয়াড়া, গোলথাই গ্রামের মানুষদের যাতায়াতের সুবিধা হয়। বলতে গেলে, এই ট্রেনটি এই এলাকার মানুষের সবথেকে বড়ো সুবিধার যাত্রাপথ।