সেচ দপ্তরের কাজে ক্ষোভ মমতার, তদন্ত কমিটি গঠন সেচমন্ত্রীর, রিপোর্ট জমা ৭ দিনেই
যশ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাজ্যের ১৩৪ নদীবাঁধ ভেঙেছে
গত বুধবার সকাল থেকে যশ ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ব্যাপক আস্ফালন দেখিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও ভরা কোটালের জুটিতে সকাল থেকেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল সমুদ্র। তারপর বেলা গড়াতেই সমুদ্রের জল হুড়মুড়িয়ে উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে প্রবেশ করে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের জেরে রাজ্যের মোট ১৩৪ টি নদীবাঁধ ভেঙে যায়। এই প্রসঙ্গেই গতকাল নবান্নে বৈঠক করার সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি সেচ দপ্তরকে ভৎসনা করে প্রশ্ন করেন, “কি করে এত বাঁধ ভাঙল?” এদিকে প্রশ্নের মুখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি গঠন করলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে গতকাল গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পেশ করবেন। আসলে গতকালের বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন বারংবার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে। তিনি সরাসরি কটাক্ষ করে বলেছেন, “প্রতিবছর আমাদের রাজ্যে একটি করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে থাকে। সেটা কিছু করার নেই। কিন্তু প্রতিবছর বাঁধ তৈরির জন্য টাকা পাঠালেও সেই কাজ ঠিকমতো হয় না কেন? তৈরি বাঁধ একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই ভেঙে যায়। সরকার টাকা জলে ঢালতে পারবে না।” স্বভাবতই মমতা ব্যানার্জির এমন বক্তব্যের পর বেজায় চাপে রয়েছেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
তবে তদন্তের পর আশা করা যায় সৌমেন মহাপাত্রের পাশাপাশি এই সেচের কাজের বিষয়ে নাম জড়াবেন তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। একুশে বাংলা বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার আগে যখন দল ত্যাগ করেছিলেন তখন পরিবেশ ও বন দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ২০২০ সালের আগে তিনি সেচমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া রাজিব ব্যানার্জিকে যখন বনমন্ত্রী করা হয়েছিল তখন সেচমন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তদন্তের ফলে এবার ওই দুই তৃণমূলত্যাগী নেতার নাম সামনে আসতে পারে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।