ফের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হলেন। এদিন বহরমপুরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে শাসকদলের বিরুদ্ধে একাধিক তোপ দাগলেন তিনি। তিনি গত বুধবার হঠাৎই দার্জিলিং থেকে মুর্শিদাবাদে চলে আসেন। হেলিকপ্টারে করে বহরমপুর স্টেডিয়ামে নামেন তিনি। সেখান থেকে সড়কপথে ৫১ পীঠের অন্যতম শক্তি পীঠ কিরীটেশ্বরী মন্দিরে সস্ত্রীক পুজো দেন। এছাড়াও এদিন হাজারদুয়ারি পরিদর্শন করেন তিনি।
এরই মাঝে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ফের শাসকদলের অরাজকতা প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে তারা কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে না। এতে ক্ষতিটা হয়ে আখেরে দরিদ্র কৃষকদের। পুরো দেশের কৃষকরা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় মাসে মাসে টাকা পায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কৃষকরা রাজ্য সরকারের জন্য সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তিনি মমতা সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, অন্নদাতা মানুষের পেটে লাথি মারা হচ্ছে রাজ্যে।
এছাড়া তিনি এদিন মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি মোশারফ হোসেনের নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে জেলা প্রশাসনকে তীব্র ভৎসনা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মুর্শিদাবাদের সভাপতির এর আগে দুজন নিরাপত্তারক্ষী ছিল। কিন্তু সে শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলে যাওয়ার পরে রাজ্য সরকার তার নিরাপত্তা রক্ষীকে তুলে নেয়। রাজ্যপাল জানিয়েছেন কোন রাজনৈতিক নেতার নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া প্রজাতন্ত্রের উপর আঘাত করার সমান। তিনি যে ব্যাপারটি একদমই ভাল চোখে নেননি তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়াও এদিন বাংলা পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। পাকিস্তানি সেনার অতর্কিত গোলাবর্ষণে নিহত ভারতীয় বীর সেনা জওয়ান সুবোধ ঘোষের শেষকৃত্যে বিজেপি সাংসদ পুলিশের ঢুকতে না দেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। তিনি টুইটে কটাক্ষ করে বলেছিলেন,”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে রাজ্যে পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বলে আর কিছু নেই। তারা শাসকদলের দাসে পরিণত হয়েছে।”
অন্যদিকে শাসকদল কিছুদিন আগে রাজ্যপালকে বিজেপির লোক বলে কটাক্ষ করেছিল। অবশ্য এদিন তিনি শাসকদলের অভিযোগকে নস্যাৎ করে বলেছেন সে কোন রাজনৈতিক দলের পরোয়া করে না। তিনি পশ্চিমবঙ্গের জনতার সেবা করার উদ্দেশ্যে এসেছেন। নির্বাচনে কে জিতল কে হারল তাতে তার কিছু যায় আসে না। সেইসাথে তিনি বলেছেন যে রাজ্যের মানুষের সুখ-শান্তি কামনা করে আজ তিনি পুজো দিয়েছেন।