কৌশিক পোল্ল্যে: আশি ও নব্বইয়ের বলিউড সিনেমাতে আমরা বরাবরই ‘কমেডিয়ান’ চরিত্রের উল্লেখ পাই। আর বর্তমানেও সেই সিনেমাই যদি কমেডি ভিত্তিক হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। এটি এমন একটি চরিত্র যা হাস্যকৌতুকে জমিয়ে রাখবে সিনেমার আবহাওয়া। শুধুমাত্র কমেডি চরিত্র করেই ইন্ডাস্ট্রিতে নাম করছেন অনেকেই, তাদের মধ্যে উজ্জ্বলতম একটি নাম জনি লিভার, জানি এবিষয়ে আপনিও সহমত হবেন। তবে একজন সাধারন পেনবিক্রেতা থেকে তিনি কীভাবে সিনেমাজগতে পা রাখলেন, সেই অজানা গল্পই চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক।
জনি লিভারের আসল নাম জন রাও। তিনি অন্ধপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও ছোটবেলাতেই মুম্বাইয়ে চলে আসেন। বৃহত্তর মুম্বাইয়ের একটি বসতিতে তার জীবনযাপন শুরু হয়। বর্ষায় বাড়ির ফুঁটো চাল থেকে জল পড়ত, সামনের রাস্তাটিও ভরে যেত অথৈ জলে, এমনই দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে তার ছেলেবেলা কাটে। বরাবরই তিনি অন্যের গলা নকল করতে এবং অভিনয় করতে ভালোবাসতেন, এভাবেই এলাকায় তার সামান্য নামডাক হয়, দু একটা স্টেজ শো পেয়েও যান সেই সূত্রে।
মাত্র সতেরো বছর বয়সে এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু করেন পেন বিক্রির কাজ, পরিবারের আর্থিক অবস্থার এতেও কোনোরূপ উন্নতি হয়নি দেখে তিনি তারই বাবার অফিস ‘হিন্দুস্তান লিভার’এ কাজ করা শুরু করেন। সেখানেও নানান অনুষ্ঠানে হাস্যকৌতুক চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে সবার মনোরঞ্জন করে জন রাও হয়ে ওঠেন সকলের প্রিয় জনি লিভার। তার সিনেমার যাত্রাও ছিল বেশ সংঘর্ষপূর্ণ।
১৯৮০ সালে চেন্নাইয়ে ‘ইয়ে রিস্তা না টুটে’ এক ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় দিয়েই তার ফিল্মের যাত্রা শুরু। মাঝে মুম্বাইয়ে ফিরে এসে বলিউডেও করেন বেশ কিছু ছবি, তবে তিনি পরিচিতি পেতে শুরু করেন ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বাজিগর’ ছবিতে কমেডিয়ান হিসেবে অভিনয়ের পর থেকে। এরপরের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা, একের পর এক সিনেমায় কমেডিয়ান হিসেবে অভিনয় করে দর্শকদের হাসির খোরাক জুগিয়েছেন প্রায় দুই দশক ধরে।
বর্তমানে ফিল্মইন্ডাস্ট্রি থেকে বেশ খানিকটা দূরত্ব রেখেছেন তিনি। মাঝে এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেন, কেরিয়ারের মাঝগগনে নাম, যশ, অর্থ কামিয়েও তিনি সুখভোগ করতে পারেননি যেটা তিনি কাজ ছাড়ার পর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে পেয়েছেন। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়, সিনেমাপ্রেমী মানুষেরা আজও তাকে মনে রেখেছেন তার অসাধারন অভিনয় প্রতিভার কারনে।