জোকা থেকে বিবাদীবাগ পর্যন্ত রুটে হয়ে গেল কলকাতা মেট্রোরে নতুন রুটের ট্রায়াল রান। পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রো চালানো হলো জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার রুটে। ২০ মিনিটের এই ট্রায়াল রানের সর্বোচ্চ গতি ছিল ২৫ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার এই সাড়ে ছয় কিলোমিটার রুটে মেট্রো ছুটল প্রথমবার। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই লাইনে ইতিমধ্যেই চাকা গড়ালো মেট্রো। কার শেডের কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ট্রায়াল রানের জন্য সড়কপথে আনা হয়েছিল মেট্রো। কলকাতা মেট্রো থেকে অবসর নেওয়া দুটি নন এসির রেক বেহালার জোকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখান থেকেই হলো ট্রায়াল রান।
ঠিক ছিল আগস্ট মাসের শেষের দিকে জোকা থেকে বিবাদীবাগ রুটের মেট্রোর ট্রায়াল রান হবে। তবে নানা টালবাহানার কারণে এই কাজটি হল সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ। ৬.৫ কিলোমিটার পর্যন্ত রুটে চলল মেট্রো। খুব শীঘ্রই এই রুটে সাধারণ যাত্রীদের জন্য মেট্রো চলাচল শুরু হবে বলে মনে করছে মেট্রো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
আপনাদের জানিয়ে রাখি এই রুটে সর্বমোট ছয়টি স্টেশন রয়েছে। এই সমস্ত স্টেশনের মধ্যে রয়েছে জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা। দুপুর ৩ঃ৩৫ থেকে শুরু হয়েছিল ট্রায়াল রান। আর চলেছিল দুপুর ৩:৫৫ পর্যন্ত। এই ট্রায়াল রানের সর্বোচ্চ গতি ছিল ২৫ কিলোমিটার। এই ট্রায়াল রানের সময় উপস্থিত ছিলেন রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড এবং মেট্রোরেলের আধিকারিকরা। মেট্রোরেল সূত্রে খবর, চলতি বছর জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত মেট্রো চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তবে তারাতলা থেকে বিবাদীবাগ এর কাজ শেষ হতে এখনো বেশ কিছুটা সময় লাগবে। এক বছরের বেশি সময়ের আগে এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বছর শেষে এই রুটের একাংশ চালু হতে পারে বলে মনে করেছেন এলাকার সাধারণ জনতা।
তবে, জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত ওই মেট্রো পরিষেবা শুরুতে ওয়ান ট্রেন সার্ভিস ব্যবস্থায় চলবে বলে জানিয়েছেন এই রুটের রেল কর্তারা। হঠাৎ একটি ট্রেন জোকা ছেড়ে সমস্ত স্টেশন হয়ে তারাতলা পৌঁছবে আবার ফিরতি পথে ওই লাইন ধরে অথবা পাশের লাইন দিয়ে তারাতলা ফিরে আসবে। অর্থাৎ মেট্রো কর্তারা বলছেন একটি ট্রেন নিয়ে যদি মহড়া দৌড় শুরু হয় তাহলে সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে না। একাধিক ট্রেন যদি লাইনে থাকে তাহলে সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়।
সূত্রের খবর মেট্রোর পরিষেবার ডিপো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। কারণ রেক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং ডিপো অত্যন্ত প্রয়োজন। জমি জটে ডিপোর নির্মাণকার্য একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থমকে থাকার পর ২০১৭ সালে এই ডিপো নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তারপরেও বহুদিন ডিপো নির্মাণের জন্য একেবারে জমি না মেলার কারণে এই কাজ শুরু হয়নি। পরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জমির দাদাদের জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করে জট ছাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুতে জমির ৯৫ শতাংশ জট কাটার কারণে পুরোমানে নির্মাণ শুরু হয়েছে সমস্ত কিছুর।