বঙ্গ রাজনীতিতে এখন চর্চার বিষয় দলবদল। কিছুদিন আগে তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। তখন থেকেই শুরু হয়েছে দলবদল এর খেলা। এরই মধ্যে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর অমিত শাহের সমালোচনা করায় বঙ্গ রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে যে তাহলে কি এবার দলবদলে খেলায় ভোলবদল হবে। অনেকেই মনে করছেন শান্তনু ঠাকুর তাহলে হয়তো এবার বিজেপি ছাড়তে পারে। সেই জন্য খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শান্তনু ঠাকুরকে তৃণমূলে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবার দলের বিরুদ্ধে বেসুরো হয়ে উঠলেন। সমালোচনা করলেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তিনি কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে আক্রমণ করেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বদের। তিনি চাঁচাছোলা ভাষায় বলেছেন, মতুয়াদের নাগরিকত্ব কবে দেবে সেই নিয়ে কি ভাবছে কেন্দ্র তা জানাতে হবে খুব শীঘ্রই। একুশে ভোটের আগে বিজেপিকে শান্তনু ঠাকুর এর সিএএ ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন উত্তাপ বাড়াচ্ছে বঙ্গ রাজনীতিতে। শান্তনু ঠাকুর প্রশ্ন করেছেন, “একুশে নির্বাচনের আগে কি রাজ্যে কার্যকর হবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন? বা কবে নাগরিকত্ব পাবে উদ্বাস্তু মতুয়ারা?” অবশ্য প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, “দেশজুড়ে করোনা ভ্যাকসিন বিতরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই CAA আমল করা নিয়ে কাজ শুরু হবে।”
শান্তনু ঠাকুরের অসহিষ্ণুতার জবাব দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, “বিজেপি কথা দিয়েছিল নাগরিকত্ব আইন করবে। কিন্তু করোনার প্যানডেমিক এর জন্য এখন কিছু প্রক্রিয়াগত কাজে বিলম্ব হচ্ছে। সরকারি অফিসে লোক কম আসছে। ভোটের আগে না হলেও ভোটের পর কাজ হবেই। বিজেপি সেই কাজ করবে।” অন্যদিকে বিজেপি নেতা তথাগত রায় জানিয়েছে, “শান্তনুর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ আছে আমাদের ফোনে। ওকে আমরা ব্যাপারটা বুঝিয়েছি। এটা অনেক বড় কাজ এবং পোকা বাছার মতো কাজ। করোনার জন্য কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু আমরা খুব তাড়াতাড়ি তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।”
অন্যদিকে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জল্পনার পর শান্তনু ঠাকুরকে তৃণমূলে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেছেন, “আমি শান্তনু ঠাকুরকে তৃণমূলে এসে কাজ করার কথা বলছি। বিজেপিতে থেকে উনি মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন না। আর এমনি তো আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেই দিয়েছে যার কাছে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড আছে সে ভারতের নাগরিক। আলাদাভাবে নাগরিকত্বের কোন দরকার নেই।” অবশ্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আহবানের এখনো কোনো সাড়া দেননি বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।