কলকাতানিউজ

কলকাতার প্রসিদ্ধ কালী মন্দির কালীঘাট, জেনে নিন এই মন্দিরের ইতিহাস

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – কলকাতায় অবস্থিত প্রসিদ্ধ কালী মন্দির গুলির মধ্যে একটি হল কালীঘাট মন্দির। শুধু তাই নয়, ৫১ সতী পীঠের মধ্যে এই ক্ষেত্রটি অন্যতম। এখানে দেবীর ডান পায়ের চারটি আঙ্গুল মতান্তরে একটি পতিত হয়েছিল।

দক্ষ প্রজাপতি নিজের গৃহে মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু সেই যজ্ঞে দেবতা, মুনি,ঋষি সবাইকে আমন্ত্রণ জানালেও, কন্যা সতী এবং জামাতা শিবকে নিমন্ত্রণ করেননি। বিনা নিমন্ত্রণে সতী সেখানে উপস্থিত হন। আর তার সামনেই শিবের নিন্দা করা হয়। স্বামীর নিন্দা সতী সহ্য করতে পারেননি। তাই যজ্ঞকুণ্ড এই নিজেকে আত্ম বিসর্জন দিতে চান তিনি। শিব প্রচণ্ড রেগে গিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন। সতীর দেহকে কাঁধে করে নিয়ে ঘুরতে থাকেন গোটা বিশ্ব। শিবকে থামাতে বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহকে খন্ড-বিখন্ড করে দেয়। সতীর দেহের বিভিন্ন অংশ যেখানে পতিত হয় সেখানেই গড়ে উঠেছে ৫১ সতীপীঠ।

জনশ্রুতি থেকে জানা যায়, ব্রম্ভানন্দ গিরি ও আত্মারাম ব্রহ্মচারী নামে দুই সন্ন্যাসী কষ্টিপাথরের উপরে একটি শিলাখণ্ডের দেবীর রূপদান করেছিলেন। বরিশাল এর সাবর্ণ জমিদার শিবদাস চৌধুরী ও তার রামলাল এবং ভাতুষ্পুত্র লক্ষীকান্তর উদ্যোগে, আদি গঙ্গার তীরে ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটি তৈরি হয়। বর্তমানে মন্দিরটির ৯০ ফুট উঁচু। এটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল প্রায় আট বছর। খরচ পড়েছিল ৩০ হাজার টাকা। জমির পরিমাণ ১বিঘা ১১ কাঠা ৩ ছটাক। মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী আটচালা। মূল মন্দিরটি ছাড়াও অনেক ছোট ছোট মন্দির রয়েছে সেখানে রাধাকৃষ্ণ শিব পূজিত হন। কালী মন্দিরের পশ্চিম দিকে রয়েছে শ্যাম রায় এর মন্দির। এই মন্দিরের কাছে রয়েছেন পীঠ রক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর শিবের মন্দির। নীল ষষ্ঠী, শিবরাত্রির অনুষ্ঠান এই মন্দিরে প্রচুর জন সমাগম হয়। কালীঘাট কালী মন্দিরের মূর্তি কষ্টিপাথরের অভিনব পদ্ধতিতে বানানো। মূর্তিটির জিভ, দাঁত, মুখ সোনার। হাত ও মুণ্ডমালা টিও সোনার। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপূজা, দীপান্বিতা কালীপূজায় এখানে ভক্তদের প্রচন্ড ভিড় হয়।

Related Articles

Back to top button