শ্রেয়া চ্যাটার্জি – গ্রীষ্মকাল পড়ে গেছে, আর গ্রীষ্মকাল মানে চারিদিকে আমের গন্ধে ম ম করছে। কেরালার এক দম্পতি নিজেদের বাগানে ফলিয়ে ফেলেছেন প্রায় ৫০ রকমের আমগাছ। আপনি হয়তো ভাববেন এ আবার নতুন কি কথা বিশাল বিশাল আম বাগানে তো এমন কত আমগাছ হয়ে থাকে। একথা ঠিক কথা, কিন্তু একটু জায়গার মধ্যে বড় বড় পাত্র ব্যবহার করে তার মধ্যে আম গাছ ফলানো চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু কেরালার এর্নাকুলাম এর জোসেফ ফ্রান্সিস ১৮০০ বর্গফুট এলাকার মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন। ৬৩ বছরের জোসেফ আজ থেকে ২০ বছর আগে এই চাষ শুরু করেন। প্রথমে শুরু করেছিলেন গোলাপ চাষ দিয়ে তারপরে অর্কিড মাশরুম এবং শেষ পর্যন্ত তিনি আম চাষ করলেন। যা তার জন্য বেশ সৌভাগ্য ডেকে এনেছিল।
জোসেফ জানান, “আমার মামার বাড়ি কোচিতে সেখানে নানান রকমের গোলাপ চাষ হতো। আর সেই গোলাপ যখন গাছ থেকে তোলা হত তখন তার পুরো কেরালাতে এক অন্যরকম সংগ্রহ ছিল যা, দেখলে চোখ জুড়িয়ে যেত। সেইখান থেকেই উৎসাহিত হয়ে আমি বাড়িতে এসে গোলাপ চাষ শুরু করি।” তারপর জোসেফ প্রচুর মাশরুম চাষ করেছিলেন এবং ভাবলেন আরো কিছু লাভের আশায় আম চাষ করা যায়। কারণ তিনি দেখলেন বড় বড় ব্যাগের মধ্যে আমের আঁটি থেকে গাছ বেরোচ্ছে। তখন তিনি ভাবলেন ব্যাগের মধ্যে যখন বড় বড় আম গাছ তৈরি হচ্ছে তখন তিনি তার উঠোনেই আম গাছ চাষ করতে পারবেন। শুধুমাত্র ব্যাগ ছাড়াও তিনি সিদ্ধান্ত নেন বড় বড় PVC ড্রাম কেটে তার মধ্যে আমের চারা লাগাবেন। তার এত সুন্দর বাগান দেখতে প্রতি রবিবার কিছু না হলেও ২০ জন লোক দেখতে আসেন। তিনি তার আম গাছের চারা বিক্রি করেন যার দাম ২,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা হয়। তাছাড়া গাছে জল দেওয়ার জন্য তিনি ড্রিপ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। আমের পাশাপাশি তিনি পেঁপে, করলা, বাঁধাকপি, টমেটো ইত্যাদি নানা ফল ফলিয়ে থাকেন।
জোসেফ জানান, “আমি প্রথমে ২৫০ রকমের গোলাপ গাছ নিয়ে শুরু করেছিলাম। আর এখন আমি আম চাষ করি। তবে কখনই আমি ব্যাবসায়িক দিক থেকে এটি ভাবিনি কারণ এখনো যা ফসল ফলে সবই আমি আমার বন্ধু পরিবার এবং যারা দেখতে আসেন তাদেরকে বিনামূল্যেই দিয়ে দিই। কারণ এই চাষ আমি আনন্দ সহকারে করি। আমার গাছের ফল সকলকে দিয়ে ও আনন্দ পাই। বর্তমানে এখন প্রত্যেকেরই বাড়িতে জায়গা কম। অল্প জায়গার মধ্যে নিজেদেরই প্রায় ঠাসাঠাসি এ করে থাকতে হয় বিশেষত ফ্ল্যাটবাড়ি গুলিতে। এই সমস্ত ছোট জায়গায় আমগাছ না হোক পছন্দের গাছ লাগানো যেতে পারে। একটু বুদ্ধি খরচ করতে পারলেই আপনি আপনার একটুকরো ফ্ল্যাটকে সুন্দর সবুজ পৃথিবীর এক টুকরো পৃথিবী বানিয়ে ফেলতে পারেন। তার জন্য একটু ইচ্ছা আর বুদ্ধির প্রয়োজন। তাহলেই বাইরের পৃথিবীতে যতই ধূসর হোক ঘরের মধ্যে ঢুকলে প্রাকৃতিক সবাই আপনার শরীর, মন দুটোই সতেজ ও ফুরফুরে থাকবে।