ঋদ্ধিমান রায়: ভারতে করোনা থাবা বসানোর পর দেশ জুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও আশ্চর্যজনক ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল কেরালার পিনারাই বিজয়নের সরকার। শুধু নিয়ন্ত্রণে রাখা নয়, নিয়মিত হারে সংক্রমণ কমতেও শুরু করেছিল কেরলে। কেন্দ্রীয় সরকারের আনলক প্রসেসও শুরু করেছিল কেরল। কিন্তু আকস্মিক ভাবে বদলে গেল বহু চর্চিত কেরালা মডেলের সুখের ছবিটা।
এই মুহূর্তে দ্রুত করোনা সংক্রমণে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে কেরল। প্রতি দিনই হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত বুধবার ২০০০ এরও বেশি করোনার কেস ধরা পড়েছে কেরলে, যা এখনো পর্যন্ত সেখানে রেকর্ড সংখ্যা। এই মুহূর্তে ৫০০০০ হাজারের অধিক কোভিড আক্রান্ত কেরলে।
গত এক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে চার গুণ। পাশাপাশি এই মুহূর্তে প্রতিদিন জাতীয় হারের চেয়েও ৪.১ শতাংশ অধিক বৃদ্ধি পাচ্ছে এই সংখ্যা। কয়েক সপ্তাহ ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যু হারও। তা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত করোনায় কম মৃত্যু হওয়া রাজ্য গুলির মধ্যে অন্যতম কেরালা। করোনার ফলে এ পর্যন্ত ২২৫ জনের মৃত্যর খবর পাওয়া গেলেও কেরল সরকারের বক্তব্য, এদের মধ্যে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে অন্য কারণে।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেরলের এমন উলটপুরাণ দশার কারণ হিসেবে সরকারের গা ঢিল দেওয়ার গাফিলতিকেই দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই যাতায়াতের নিয়মবিধি শিথিল করে দেয় কেরল। দেশের অন্য রাজ্য থেকে কেরলে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কেরল সরকার। গত দুই মাসে দেশ বিদেশ থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ বাইরে থেকে কেরলে ফেরেন। দেখা যাচ্ছে এদের মধ্যে এক চতুর্থাংশই করোনা আক্রান্ত। পাশাপাশি এলাকার মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের মধ্যে কেরলই একমাত্র রাজ্য যেখানে ইতিমধ্যে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অন্তত উপকূলীয় অঞ্চলে এই প্রবণতা বেশ গম্ভীর ভাবে লক্ষণীয়।