কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লকডাউনের সময় তিলোত্তমার রাস্তাঘাট শুনশান হলেও এটা স্বাভাবিক চিত্র নয়। বরং চিত্রটা একটু উল্টো। কলকাতার রাস্তায় যানজট হবে না, এমনটা বোধ হয় বিদেশ থেকে আসা কোনও ব্যক্তিও ভাবতে পারে না। ট্রাফিক সিঙ্গেল থাকা সত্ত্বেও ট্র্যাফিক জ্যাম শহরবাসীর দৈনন্দিন জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে উঠেছে। অফিস টাইমে ভিড়, স্কুল টাইমে ভিড়, এমনকি পুজোর সময় রাস্তায় যানজট দেখা যায়। আর তাই কলকাতা বন্দরের সামনে যানজট এড়াতে নয়া পদক্ষেপ নিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। কারণ, কলকাতার অন্যান্য রাস্তার মধ্যে অন্যতম যানজটপূর্ণ জায়গা হল বন্দর এলাকা। যানজটের ফলে কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে বন্দরে কর্মরত মানুষজনদের। আর তাই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর GOCON নামক নতুন অ্যাপ চালু করল।
বন্দরে প্রতিদিন একসাথে ১৫০০ গাড়ি ঢোকে বেরোয়। খিদিরপুর ডক, নেতাজী সুভাষ ডক সহ একাধিক বার্থ প্রতিদিন কন্টেনার আসা যাওয়া করে। বিশেষ করে এই কন্টেনার যেভাবে যাতায়াত করে তার জেরে অবস্থা খারাপ হয় সাধারণ মানুষের। এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে GOCON মাধ্যমে এমনটাই দাবি বন্দরের। এই অ্যাপের মাধ্যমে কন্টেনার চলাচলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা মিলবে বলে দাবি করা হয়েছে।
বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এটা খানিকটা ওলা-উবের অ্যাপের মতো। বহু কন্টেনার ফাঁকা আসে বন্দরে। সেখান থেকে পণ্য নিয়ে চলে যায়। অনেক সময় পণ্যবাহী কন্টেনার আসে। কিন্তু ফেরত চলে যায়। যদিও ফাঁকা কন্টেনার রাস্তায় এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকে তার জেরে যানজট হয়ে যায়। প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে এই GOCON অ্যাপ। এর মাধ্যমে দুই প্রান্তের জায়গা বাছাই করতে হবে। সময় দিতে হবে। কতদিনের জন্যে কন্টেনার প্রয়োজন সেটাও উল্লেখ করতে হবে। সেই রিকোয়েস্ট চলে আসবে বন্দরের বিশেষ সার্ভারে। তাতেই বুকিং হয়ে যাবে কন্টেনার।’
এই অ্যাপ তৈরি করেছে একটি বেসরকারী সংস্থা। সেই সংস্থার কর্ণধার প্রতীক সুরেখা বলেছেন, ‘অত্যন্ত সহজ এই ব্যবস্থা। গোটা দেশের বিভিন্ন লরি ও কন্টেনার চালকরা এটা ব্যবহার করতে পারবেন। এই অ্যাপের মধ্যে জিপিএস ব্যবস্থা থাকছে। ফলে কার পণ্য কোথায় থাকছে তাও জানা যাবে এর মাধ্যমে।’ তবে GOCON রেজিস্টার্ড করতে টোকেন ফিজ প্রয়োজন। আপাতত গোটা দেশের বিভিন্ন বন্দরে এইভাবে GOCON মারফত কন্টেনার বুকিং করা যাবে। বন্দর এলাকায় যানজট হবে না এর ফলে। আর যানজট না হলে দূষণ হবে না বলেও মনে করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।