কলকাতা : মহানগরের বহু রাজপথ ভেঙেচুরে গিয়েছে। মাঝে মাঝেই পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। বাড়ছে প্রতি মূহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।বিভিন্ন রাস্তার এ হেন বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাস্তা খারাপের জন্যে দায়ী করছেন ওভারলোডিংকে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বা মোড় এই ওভারলোডিংয়ের জেরে যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে রাজ্যের পূর্ত দফতরের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। ওভারলোডিং বন্ধ করে যাতে দ্রুত রাস্তার হাল ফেরানো যায় তা দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞরা কতগুলি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, একটি গর্ত ধরা পড়লেই, সঙ্গে সঙ্গে তার মেরামত করতে হবে। বিটুমিনাস রোড সরাতে হবে। খরচ বেশি হলেও কংক্রিটের রোডের দিকে ঝুঁকতে হবে। জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়ক যে নকশায় বানানো হয়, তা কখনওই গ্রামের রাস্তায় থাকে না। ফলে ওভারলোডেড গাড়ি শুধু নয়, যে কোনও পণ্যবাহী গাড়ি এই সব রাস্তায় ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়।
তাঁর পরামর্শ, রোড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি রোড হেলথ মনিটরিং করুক। না হলে বোঝা মুশকিল কোন কোন রাস্তার কী কী অবস্থা হচ্ছে। আগে ২০ বছরের স্থায়িত্ব ধরে রাস্তা বানানো হত। এখন গাড়ির চাপ যে ভাবে বেড়েছে সেটা ১০ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। কাগজে কলমে থাকা পণ্যের ওজন আর বাস্তবে ওজনে ফারাক অনেক। তাই পুলিশের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া। টোল প্লাজায় ওজন মাপার ব্যবস্থা হোক। অতিরিক্ত ওজন নিলে ফাইন হোক মোটা টাকার। এটাই রাস্তা টেকানোর উপায়।
আর এক সড়ক বিশেষজ্ঞ সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, আবহাওয়া ও মাটির চরিত্র এখানে রাস্তার সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। তাই রাস্তার ব্ল্যাক টপ ঠিক রাখা জরুরি। যে কারণে ব্যবহার করা উচিত মাইক্রোসারফেসিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে, ফাইন চিপস, সিমেন্ট, বালি, বিশেষ রাসায়নিক, জল ও বিটুমিন একসঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে জল রাস্তার ওপরের আস্তরণ সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না।