কলকাতা: হাট-বাজার বা চায়ের ঠেক, ২৮ ফেব্রুয়ারি (February) ব্রিগেডের সমর্থনে সিপিআইএম’র বাজার মিটিংয়ের পরে টুম্পা বাজছে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জজ বাবুর বাজারে। এটাই ধাক্কা। এই ধাক্কাটা দরকার ছিল। বলছেন সিপিআইএম (CPIM) কর্মীরা। ৩৪ বছর শাসনের পর বামেরা বাংলায় বিরোধী দল হিসেবে ছিল। গত লোকসভা ভোটের পর তাঁদের সেই জায়গা নিয়েছে বিজেপি। বেকারত্বের জ্বালায় মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে হন্যে হয়ে। পেটে খিদে নিয়ে কানের কাছে শুনছে প্রতিশ্রুতি, DA এর গালভরা গল্প। CAA এর আতঙ্ক শুনতে শুনতে আর নোট বন্দীর পর খালি পার্স হাতে বামেদের ভোট গিয়ে নেমেছে ৭ শতাংশে।
আর সেই ৭ থেকেই ফের শুরু করছে বাম। সাদা মাথার সঙ্গে প্রথম সারিতে কাঁধ মিলিয়ে স্লোগান তুলছে কালো মাথা। তৈরি হচ্ছে বুদ্ধদেবের উন্নততর বাম। ২১ এর নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্লোগান উঠেছে “খেলা হবে”, সেই স্লোগান নিয়ে ঘুরিয়ে নিজেদের মতো করে ব্যাবহার করছে সব দলই। তৃনমুলের খেলা ঘোরাতেই গত ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযান করে ফিরেছে বামেরা। সবাই প্রশ্নও তুলেছিল এতো বাম সমর্থক ছিল কোথায়? বামেদের এই কামব্যাকে কেউ কেউ মনে করেছিল বামেদের পুরনো স্লোগানের কথা । “দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে দেওয়াল জুড়ে লিখতে হয়”। কিন্তু এবার দেওয়াল নয় সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে একছত্র দখন নিয়েছে বামেদের টুম্পা প্যারোডি।
যদিও সিপিআইএম খাতা-কলমে এই গানের দায়ভার স্বীকার করেনি। তবে সূর্যকান্ত মিশ্র তার নিজের ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্টে গানটা প্রচার করেছেন। সুজন চক্রবর্তী গান নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। শেয়ার করেছেন শতরূপ সহ প্রায় সব বাম নেতৃত্বই। তাছাড়াও নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন মহম্মদ সেলিম। তবে নিন্দা যে একেবারে হয়নি তা কিন্তু নয়। কয়েকজন নেতার খুব মুখ ভার হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ব্রিগেড ভরাতে টুম্পা!! যদিও দমছেন না বাম কর্মীরা। একটা গানের প্যারোডি বামেদের এনে দিয়েছে লড়াইতে।
একটা সময় ভোট উপলক্ষ্যে বিরোধী দলগুলির মধ্যে দেওয়ালে, দেওয়ালে ছড়ার লড়াই, ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিযোগিতা চলত। এখন সে সব লাটে তুলে সবাই পেশি শক্তির প্রদর্শনেই মন দিয়েছে। অসভ্য, কুরুচিকর কথা বলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করাই এখন অস্ত্র। তারমধ্যে বামেদের টুম্পা সোনা অন্যরকম। যারা লিখেছেন, অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন সেই রাহুল, নীল্বাজদের ভাবনাতাকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। প্যারোডির মধ্যে এমন একটাও লাইন লেখা নেই যা নিয়ে আদালতে যেতে পারেন কেউ! বরং সহজ ভাষায় বামেদের মূল প্রচার কে পৌঁছে দিয়েছে একেবারে সাধারনের ঘরে। চায়ের ঠেকে আড্ডা শুরু হয়েছে এই বামকেই চায় মানুষ।
সবথেকে বড় কথা তাত্বিক বাম মানসিকতা ছেড়ে সূর্যকান্ত মিশ্র রা যখন এই প্যারোডি শেয়ার করে শিলমোহর দিয়েছেন যৌবনের দূতদের তখনই সব টিভি চ্যানেল, খবরের কাগজে ব্রাত্য বাম ফিরে এলেছে টাইমলাইনে। যে যাই বলুক কংগ্রেসের সাথে জোট করতে যারা ভ্রু কুঞ্চিত করেন না সেই নেতারা টুম্পা নিয়ে বিতর্কিত কথা না বললেই ভাল করবেন বলেই ব্যাক্তিগত ধারনা আমার। বলা যায়না, ফেরাতে হাল লাল ফিরবে হয়তো যৌবনের প্রতীক টুম্পাদের হাত ধরেই।