নিউজ

বারোয়ারি দুর্গোৎসবের সূচনার ইতিহাসটা ঠিক কেমন ছিল?

Advertisement

অরূপ মাহাত: দুর্গাপূজার উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল বা কবে হয়েছিল সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ভারতের মাতৃতান্ত্রিক দ্রাবিড় সভ্যতায় মাতৃদেবীর আরাধনার প্রমাণ পাওয়া যায়। সিন্ধু সভ্যতায়ও দেবীমাতার পূজা করা হতো। মনে করা হয় যে সেই সময় শিবের অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে দেবীমাতা বা দুর্গার পূজা করা হতো। তবে বারোয়ারি পূজা বা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের প্রচলন শুরু হয়েছিল মূলত পরাধীন ভারতবর্ষে।

বনেদি বাড়ির পারিবারিক পূজাকে ছাপিয়ে বারোয়ারি বা সর্বজনীন দুর্গা পূজার প্রচলন কিছুটা স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্ত ব্যক্তিত্বদের হাত ধরেই হয়েছিল। সেই সময় বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় গ্রামবাসীরা যৌথভাবে যে পূজার আয়োজন করেছিলেন তা আজ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বারোয়ারি বা সর্বজনীন পূজার জনপ্রিয়তার চাপে ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে বনেদি বাড়ির পূজা।

পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সময় সার্বজনীন পূজার প্রচলন শুরু হয়। মনে করা হয় যে, দেবী দুর্গাকে মাথায় রেখেই ভারতমাতার কল্পনা করা হয়েছিল, যা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে চরম পর্যায়ে উন্নীত করতে অনুঘটকের কাজ করেছিল। দেবী দুর্গার ভাবনা থেকেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বন্দে মাতরম গানটি রচনা করেন যা ভারতের স্বাধীনতা-আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্র। সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ বিল্পবী ও জাতীয়তাবাদী নেতারা বিভিন্ন সর্বজনীন পূজার সঙ্গে যুক্ত থাকতেন।

বর্তমানে সর্বজনীন পূজাগুলিতে “থিম” বা নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক মণ্ডপ, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। থিমগুলির শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে “শারদ সম্মান” নামে বিশেষ পুরস্কারও দেওয়া হয়।

Related Articles

Back to top button