বর্তমানে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমনের হার লাফিয়ে বাড়ছে। লকডাউন শুরু থেকেই রাজ্যে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আনলক প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পরে রেল ট্রেন চালাতে চাইলেও রাজ্যের তরফ থেকে অনুমতি পায়নি। কিন্তু, পরবর্তী সময় নিত্যযাত্রীদের প্রবল অসুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্য নিজেই রেলকে চিঠি দিল। এরপর প্রতিদিন বিশেষ কয়েকটি ট্রেন চালানোর আর্জি জানিয়ে রেলকে চিঠি দিলেন রাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। শনিবার রাজ্যের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল এবং বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানো যেতে পারে।
আনলক প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে শুধুমাত্র রেলকর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন চলছিল। কিন্তু স্পেশাল ট্রেনগুলিতে অ-রেলকর্মীদের জোর করে উঠে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্টেশনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। শুক্রবারের পর শনিবারও হাওড়া স্টেশন চত্বরে সাধারণ যাত্রীরা স্পেশাল ট্রেনে ওঠা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা হাওড়ার ক্যাব স্ট্যান্ড রোড দিয়ে স্টেশনে ঢুকতে চেষ্টা করলে আরপিএফ বাধা দেয়। তারপরই আরপিএফ এর সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। তাদের দাবি তাদের মধ্যেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যকর্মী ও জরুরি কাজ এর সাথে যুক্ত। তাই তাদের রেল কর্মীদের জন্য বরাদ্দ স্পেশাল ট্রেনে উঠতে দিতে হবে।
রেলকে পাঠানো চিঠিতে স্বরাষ্ট্রসচিব রাজ্যের সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করেছেন। সেই সাথে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, শুধুমাত্র রেল কর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা ব্যাপারটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। অন্যান্য সরকারি কর্মচারী ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও, সাধারণ মানুষের প্রতি আরপিএফ এর আচরনের তিনি তীব্র নিন্দা করেছেন। চিঠিতে হাওড়া স্টেশনে সাধারণ যাত্রীদের ওপর আরপিএফ এর লাঠিচার্জ ও তাদের ব্যবহার নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মেট্রো চলার প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে বলেছেন, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করে রাজ্যে বেশ ভালই মেট্রো চলছে। সেরকমভাবে কোন একটি নির্দিষ্ট মডেল মেনে রেলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাধারণ যাত্রীদের জন্য কিছু স্পেশাল ট্রেন চালাতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদী রেলকে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, রাজ্যে খুব ভালোভাবেই মেট্রো চালানো হচ্ছে। মেট্রো নিয়ে বর্তমানে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে কোনো সমস্যা নেই।
শনিবার রাতে রেলের তরফ থেকে স্বরাষ্ট্রসচিবের চিঠির কথা মেনে নেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাজ্য ও রেল দুপক্ষের বৈঠক করার পরই বাংলায় ট্রেন চালানো যাবে। এরপর রাজ্য কবে বৈঠকে বসবে তার ওপর নির্ভর করছে লোকাল ট্রেন কবে থেকে চালু হবে।