মহারাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোটের (শিন্ডে গোষ্ঠী, বিজেপি এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপি) নিরঙ্কুশ জয়ের পিছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে মাঝি লাডলি বহন যোজনা। এই প্রকল্পটি মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমীকরণে এক গুরুত্বপূর্ণ গেম চেঞ্জার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
মাঝি লাডলি বহন যোজনার সূচনা ও উদ্দেশ্য
২০২৪ সালের ১ জুলাই মহারাষ্ট্র সরকার এই প্রকল্পটি চালু করে। মূলত গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির মহিলাদের আর্থিক স্থিতি উন্নত করা এবং তাদের ক্ষমতায়নই ছিল এর প্রধান লক্ষ্য। যেসব পরিবারের বার্ষিক আয় ₹২.৫ লক্ষের কম, সেই পরিবারের মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী।
প্রথমদিকে, মাসে ₹১,৫০০ টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া শুরু হয়। তবে, নির্বাচনী ইস্তেহারে মহাজোট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ক্ষমতায় এলে এই টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ₹২,১০০ করা হবে। নির্বাচনের আগে চতুর্থ কিস্তি দিয়ে পাঁচটি কিস্তি আগেই প্রদান করা হয়, যা ভোটারদের মধ্যে এই প্রকল্পের প্রতি আস্থা বাড়ায়।
বিরোধী মহাজোটের পাল্টা পরিকল্পনা
এই যোজনার জনপ্রিয়তাকে মোকাবিলা করতে বিরোধী জোট নিজেদের ইস্তেহারে মহালক্ষ্মী স্কিম নামে একটি বিকল্প প্রকল্প প্রস্তাব করে, যেখানে মহিলাদের মাসিক ₹৩,০০০ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবুও, ভোটাররা মাঝি লাডলি বহন যোজনার প্রতি আস্থা রেখেছিলেন এবং মহাজোটকে বিপুল ভোটে জয়ী করেন।
নির্বাচনের পর ফলাফল ও প্রকল্পের বিস্তার
২০ নভেম্বর ২০২৪-এ ২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর, মহাজোট সরকার এই প্রকল্পের টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ₹২,১০০ করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মাঝি লাডলি বহন যোজনা শুধুমাত্র একটি আর্থিক প্রকল্প নয়; এটি মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে মহিলাদের ভূমিকা আরও সুসংহত করেছে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীদের মধ্যে প্রকল্পটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ প্রেরণের মাধ্যমে প্রকল্পটি স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা সরকারের প্রতি জনগণের বিশ্বাস বাড়িয়েছে।