নিউজপলিটিক্সরাজ্য

কিছুদিন পরে আপনাদের বলতে হবে, ভাইরে সারা দেশ পেলেও বাংলাটা পেলাম না, বিজেপিকে কটাক্ষ করে মন্তব্য মমতার

Advertisement

বাঁকুড়া সভা থেকে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বাম এবং কংগ্রেসকে একই সারিতে রেখে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন। বিধানসভা নির্বাচন একেবারে দোরগোড়ায়। তার আগে প্রত্যেকটি দল তাদের অস্ত্র সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। বিজেপি যেমন অভিযোগ করছে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে তেমনি তৃণমূল বাকি বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে কটাক্ষ শুরু করেছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার সভা থেকে বিরোধী দলগুলির উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, তৃণমূলকে হারাতে তিন দল এক হয়েছে। মমতা বললেন, জগাই মাধাই এক হয়েছে। এছাড়াও বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে টাকা ছড়ানোর অভিযোগও তুললেন তৃণমূল নেত্রী।

কিছুদিন আগে বাঁকুড়াতে আদিবাসী বাড়িতে এসে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই পরিবারকে সাহায্য করার। এদিন সেই প্রসঙ্গে ও কটাক্ষ শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বললেন, ফাইভ স্টার হোটেলের রান্না করা খাবার নিয়ে এসে লোক দেখাচ্ছে অমিত শাহ। তিনি আরো বললেন,”আমিও তো গিয়েছিলাম আদিবাসী বাড়িতে। তাদের খাটিয়ায় বসেছিলাম। তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কই ছবি তোলার জন্য তো এরকম ধরনের কর্মসূচি করিনি।”

এদিন মঞ্চ থেকে তৃণমূল সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, মেয়েরা আমাদের গর্ব। মা মেয়েদের জন্যই সংসার দাঁড়ায়। যারা স্কুলে পড়ে তারা সকলেই কন্যাশ্রী টাকা পাবে। এছাড়াও ১৮ বছর বয়স হলেই আমরা ২৫ হাজার টাকা দিচ্ছি। সকলে সেই টাকা পাচ্ছে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গাতে আমরা টাকা দিচ্ছি। এছাড়াও তিনি বলেছেন, মেয়ের বিয়ের জন্য গরিব মানুষকে ২৫ হাজার টাকা সাহায্য করছে রাজ্য প্রশাসন। কেউ যদি বিদেশে পড়তে যায় তার জন্য লোন দেওয়া হচ্ছে ২০ লক্ষ টাকার। আবার দেশে পড়লে লোনের পরিমাণ হচ্ছে ১০ লাখ।

১ ডিসেম্বর থেকে প্রত্যেক দরজাতে দরজাতে সরকার গিয়ে পৌঁছবে। যারা এখনো পর্যন্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাননি তারা সেখান থেকে সমস্ত সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। বিজেপি সারাবছর মানুষকে বোকা বানিয়ে এসেছে। বিজেপি এমন ভাবে সব কিছু লুটে নিচ্ছে, চাষিরা দাম পাচ্ছে না জিনিসের। ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের অভিশাপ এই অভিযোগকে বন্ধ করতে হবে। আর এর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারি কাজ এখন বিনা পয়সায় হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও বিজেপি একটু বেশি রটিয়ে বেরিয়েছে। সিপিএম তাদের সাথে হাত মিলিয়ে এক সাথে যোগসাজশ করছে। সবাই খারাপ হয় না, কিছু ভালো মানুষ আছে। তৃণমূল সরকার কখনো দাঙ্গা তে মদত দেবে না। ব্যক্তিগত কারনে আপনাদের রাগ-ক্ষোভ থাকতে পারে কিন্তু তৃণমূলকে আপনারা খারাপ ভাববেন না।

বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, বিজেপিকে বলে রাখি, আপনারা বাংলা পাবেন না। এছাড়াও দলের মধ্যে পর্যবেক্ষক নিয়ে সমস্যার কথা উল্লেখ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, কে কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, কে কি করছে সব কিছু খবর আমার কাছে আছে। কেউ কোন জেলার অবজারভার নয়, পুরো রাজ্যের অবজারভার আমি নিজে। কিছুদিন সরকারের কাজের জন্য দলকে একটু ঢিলে দিয়েছিলাম। এবার থেকে পুরো দল আমি সামলাব। দু’একজনকে দেখবেন, তৃণমূল করছে কিন্তু আবার অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। আমি সব জানি কিন্তু ছেড়ে রেখেছি। এই ধান্দাবাজদের একটা দল আছে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেদের উদ্দেশ্য করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, এই ছয় মাস তোমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বিজেপিকে বাংলা ছাড়া করার জন্য তোমাদের অবদান প্রয়োজন। তোমরাই পারবে বিজেপিকে বাংলা থেকে বিতাড়িত করতে। বিজেপির বিরুদ্ধে ভয়-ভীতি রাজনীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মমতা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, ” আমাকে ভয় দেখিয়ে কিচ্ছু হবে না। বিজেপি বাংলাতে একটা আসনও পাবে না। আমি জেলে থাকলেও তৃণমূলকে বাংলা জেতাবো।”

Related Articles

Back to top button