দু’মাসে ৯টি চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে, উত্তর মিলল না একটিরও, ক্ষুব্ধ নবান্ন
২ মে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত নয়টি চিঠি লিখে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে
২ মে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় জনতা পার্টি কে একেবারে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন মমতা। তার পর থেকে এই মাসখানেকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ন’টি চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত একটি চিঠির ও প্রাপ্তি স্বীকার করেনি এখনো পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। আর এই বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা সম্পূর্ণ নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন, ৫ ই মে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে টিকা এবং রেমডেসিভির এছাড়াও করোনাভাইরাস এর পথ্য, অক্সিজেন এবং অক্সিজেন সিলিন্ডারের যোগান নিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরের চিঠি ছিল ঠিক তার পরের দিন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী কিষান যোজনায় বকেয়া টাকা মেটানোর দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারপরে ৭মে আরো একটি চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রীকে উল্লেখ করে, যেখানে তিনি অক্সিজেন যোগানোর দাবি রেখেছিলেন। তারপর ৯ ই মে প্রধানমন্ত্রীকে আরো একটি চিঠি, সেখানে তিনি অক্সিজেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার, কনসেনট্রেটর, এবং ক্রায়োজেনিক ট্যাংক এবং ওষুধের উপর কর সরিয়ে নেওয়ার আর্জি রাখলেন। এছাড়াও ১২ ই মে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন বিদেশ থেকে টিকা আমদানির পরামর্শ দিয়ে। এছাড়াও রাজনীতিকে কারখানা তৈরীর জমি দেওয়ার প্রস্তাব জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৪ ই মে আরো একটি চিঠি যেখানে তিনি জানিয়েছেন রাজ্যের হাসপাতাল গুলির জন্য টালবাহানার পর এ ৭০ টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র কিন্তু এসেছে এখনো পর্যন্ত মাত্র ৪টি। এছাড়াও ২০ মে তিনি চিঠি লিখলেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের অবিলম্বে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি তুলে।
৩১ এ মে আলাপন বন্দোপাধ্যায় কে দিল্লিতে বদলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন তিনি। সেখান থেকে উল্লেখ করেছিলেন ওই বিষয়টি সম্পূর্ণ বেআইনি বিরুদ্ধে এবং নজিরবিহীন। তার পাশাপাশি চিঠি দ্বিতীয় অংশে কলাইকুন্ডা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে সবিস্তারে নিজের বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর শেষ চিঠি ২৪ শে জুন যেখানে কোভ্যাকসিন টিকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন নেওয়া নিয়ে আর্জি রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানাচ্ছেন ভোগান্তিতে পড়েছেন যারা এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন, কারণ এই ভ্যাকসিনটি বিশ্বস্তরে অনুমোদনযোগ্য নয়।
নবান্ন সূত্রে খবর এখনো পর্যন্ত নয়টি চিঠি লিখে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাবন্দোপাধ্যায় কিন্তু একটি চিঠির ও প্রাপ্তি স্বীকার করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি ভারতীয় জনতা পার্টি কে কটাক্ষ করেছে। তারা বলেছে এবারের নির্বাচনের হার তারা মেনে নিতে পারেনি। ২০০ আসলে লক্ষ্যমাত্রা দিলেও তারা ১০০ আসন পার করতে পারেনি এবারের নির্বাচনে। এই কারণে শুরু হয়ে গেছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকাকে কটাক্ষ করেছেন।