সাড়ে তিন বছর পরে ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে। ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন মুকুল রায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সূচনাকাল দেখে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন মুকুল। সবথেকে নিচের লেভেলে নেতা থেকে সবথেকে উপরের লেভেলের নেতা পর্যন্ত সকলের সঙ্গে যোগাযোগ মুকুল রায়ের সবথেকে ভালো। কিন্তু এরকম একটি নেতা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে চলে যাওয়ায় সংগঠনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল বটে। তার সাথে ২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুকুল রায়ের হাত ধরে বহু হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রুদ্রনীল ঘোষ, এছাড়াও আরও অনেক নেতা এসেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু দিন কয়েকগুলো দিনে বিজেপির সঙ্গে মুকুল রায়ের সম্পর্কে খুব একটা ভালো নেই।
কিছুদিন আগে তার স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পরে এই ফাটল আরো গভীরভাবে চোখে পড়তে শুরু করে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে মুকুল রায় এবং তার পুত্র শুভ্রাংশু রায় এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তেমনভাবে তার স্ত্রী এর খোঁজখবর নিতে আগ্রহী ছিলেন না। তারপর থেকেই মনে করা হচ্ছিল মুকুল রায় খুব শীঘ্রই তৃণমূল শিবিরে যোগদান করবেন। সেই গল্প না সত্যি করে দিয়ে আজ দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগদান করলেন মুকুল।
মুকুল রায় নিজেও কোনদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো খারাপ আক্রমণ করেননি বা কোন খারাপ কথা বলেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সৌজন্যে রেখে মুকুলের বিরুদ্ধে কোনো পার্সোনাল আক্রমণ করতে চাননি। বিরোধিতা হয়েছে কিন্তু সেটা শুধুমাত্র কাজ নিয়ে, নোংরা আক্রমন করা হয়নি। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গোটা তৃণমূল দল সাদরে আমন্ত্রণ জানালো একদা চাণক্য মুকুল রায় কে।
কিন্তু ভোটের আগে যে সমস্ত নেতা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন তাদেরকে শুধুমাত্র সুবিধাবাদী নেতা হিসেবে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কড়া ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন গদ্দারদের তিনি দলের নেবেন না। রাজনৈতিক মহলের মতামত নাম না করে এই গদ্দার কথাটি তিনি শুভেন্দু অধিকারীর জন্য ব্যবহার করলেন। অর্থাৎ তিনি ঠারে ঠারে জানিয়ে দিলেন অন্যরা ফিরতে পারলেও শুভেন্দু অধিকারী আর কোনদিনও তৃণমূলে ফিরতে পারবেন না। এখন এটাই দেখার, মুকুল রায়ের হাত ধরে যারা তৃণমূল করে বিজেপিতে গিয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে কত জন নেতাকে তৃণমূল আবার ফিরিয়ে নেয়।