ফের কোচবিহারে তৃণমূলে বিদ্রোহ। এইবার প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে দেখা গেল সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়ার অভিযোগ। তিনি যখন এই অভিযোগ আনেন তখন মঞ্চে বসেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতীম রায়, মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সহ একাধিক নেতা। কেবল সেখানেই থামেননি তিনি। এইদিন তাকে দেখা গিয়েছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করতে। অন্যদিকে দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে এইদিন সদ্যনিযুক্ত ব্লক সভাপতিকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জগদীশবাবু। সঙ্গে অবগত করেন নিজের দল বদলের সম্ভাবনার সাথেও। ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তাকে সাংগঠনিক কাজে প্রশান্ত কিশোরের দলের হস্তক্ষেপেরও।
মঙ্গলবার তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কিছু কর্মী। তাদের সামনেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিধায়ক। বিকেলে এক কর্মীসভায় দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও কথা বলতে দেখা যায় তাকে। এইদিন তিনি বলেন,”চেয়ারে অনেক নেতারা বসে আছেন। তাদের হাতেই রয়েছে কোচবিহারের জেলা তৃণমূলের ভবিষ্যৎ। তবে তার আগে ঠিক করতে হবে যে তারা কি চান। তারা কি চান কোচবিহারে তৃণমূলকে আরও মজবুত করতে নাকি বিজেপিকে উপহার দিতে। সংগঠিত করার বদলে তাচ্ছিল্য চলছে এই জেলায়। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাদেরই। আপনারাই কারিগর।”
অন্যদিকে দলীয় নেতৃত্বের একাংশ কে সতর্ক ও করতে দেখা গেছে তাকে। সতর্ক করে তিনি বলেন,”আমার ওপর একা আঘাত আসেনি। গোটা জেলার সবার ওপর আসবে এই আঘাত। জেলার অনেক নেতাই বিজেপির সাথে যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন। ২০১৯ এ তারা বিজেপি কে সাহায্য করেছিল। আর তারা আজকের নেতা। তবে এখন নয়, বোঝা যাবে ২১ এর ভোটে, কে কত বড়। বিপদ টা আমার একার হবেনা। সবার হবে, যদি ২১ সালে ক্ষমতায় মমতা ব্যানার্জি না থাকে তবে।”
তবে কোচবিহারের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আজকের নয়। সেখানে প্রথমে পার্থপ্রতিম রায়ের সাথে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। এরপর উদয়ন গুহ যোগ দেন তৃণমূলে। তখন লড়াই হয়ে যায় ত্রিমুখী। যার জেরে নিয়মিত রক্ত ঝরে কোচবিহারে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছিল। অর্থাৎ তাসের ঘরের মতো সংগঠন পড়ে রয়েছে জেলায়।