বর্তমানের কর্মব্যস্ত জীবনে কাজের ফাঁকে আলাদা করে নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়া সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে আজকের দূষণে ভরা পরিবেশে ত্বকের যত্ন নেওয়া ভীষণভাবে প্রয়োজনীয়। সময়ের অভাবে ত্বকের যত্ন নিতে চিকিৎসক কিংবা কোন বিউটি পার্লারের দ্বারস্থ হন বেশিরভাগই। তবে সেক্ষেত্রে একাধিক কেমিক্যালযুক্ত উপাদান ত্বকের উপর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর যার ফলস্বরূপ নানা সমস্যা দেখা দেয় খুব অল্পসময়ের মধ্যেই।
অনেক সময়ে অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া, দূষিত পরিবেশ, পর্যাপ্ত জল না খাওয়া ত্বকের সমস্যার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে মুখে প্রকট হয় ব্রণর সমস্যা। নেই পুজো আসছে আর তার আগেই ত্বকের সমস্ত রকম সমস্যা দূর করতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। তাদের জন্য এই নিবন্ধ খুবই কার্যকরী হতে চলেছে। তবে ত্বকের একাধিক সমস্যা দূর করতে দুধ সবথেকে বেশি কার্যকরী। তবে কাঁচা দুধের মধ্যে যদি দুটি জিনিস মেশানো সম্ভব হয় তবে ত্বক উঠবে আগের থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বল। এই নিবন্ধের সূত্র ধরে উজ্জ্বল ত্বকের জন্য পাঁচটি ফেসপ্যাকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
১) কাঁচা দুধ, মধু, কলা:
• প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণমতো কাঁচা দুধ, মধু ও একটি গোটা কলা ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।
• এরপর এই মিশ্রণে অল্পপরিমাণে গোলাপজল যোগ করে সেটিও ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
• পরে সেই প্রলেপ গোটা মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে অন্তত ১৫ মিনিট শুকানোর জন্য ছেড়ে দিতে হবে। পরে পরিষ্কার জল দিয়েই ধুয়ে নিতে হবে মুখ।
উল্লেখ্য, কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও ই বর্তমান। পাশাপাশি মধু ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে থাকে। ত্বকের মৃত কোষগুলিকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেয় দুধ। এক্ষেত্রে এই ধরনের ফেসপ্যাক উজ্জ্বল ও কোমল ত্বক বজায় রাখতে ভীষণভাবে কার্যকরী।
২) বাটার মিল্ক ফেসপ্যাক:
• প্রথমে একটি পাত্রে আদ কাপ বাটার মিল্ক নিতে হবে।
• এরপর তার মধ্যে অল্পপরিমাণে টক দই মিশিয়ে একটি ঘন প্রলেপ তৈরি করতে হবে।
• এরপর সেই প্রলেপ ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে এক ঘন্টার জন্য ছেড়ে দিতে হবে। পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে মুখ।
উল্লেখ্য বাটার মিল্কে এক্সফোলিয়েটিং বৈশিষ্ট্য বর্তমান রয়েছে যা, ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে থাকে।
৩) বেসন ও হলুদ:
• প্রথমে একটি পাত্রে দুই টেবিল চামচ বেসন, এক চুটকি হলুদ ও পরিমাণমতো টক দই নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
• পরে এই মিশ্রণ গোটা মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে অতিক্রান্ত হলে মুখ ধুয়ে নিতে হবে পরিষ্কার জল দিয়ে।
• যদি তৈলাক ত্বকের সমস্যায় ভোগেন তবে এই মিশ্রণের মধ্যে কয়েক ফোঁটা পাতি লেবুর রস মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে যা, ত্বকের তৈলাক্তভাব কাটাতে সহায়তা করার পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বলও রাখে।
উল্লেখ্য, প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেটের মত উপাদানে সমৃদ্ধ বেসন। এটি ত্বকের কালো দাগ, ব্রণ কিংবা অ্যান্টিএজিংয়ের সমস্যা দূর করতে ভীষণভাবে কার্যকরী। পাশাপাশি হলুদ যে ত্বকের জন্য কতটা উপকারী, তা আর আলাদাভাবে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
৪) মিল্ক পাউডার:
• প্রথমে একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ দুধ গুঁড়ো এবং দুই টেবিল চামচ টক দই নিয়ে ভালোভাবে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।
• এরপর ঐ মিশ্রণে এক চা চামচ পাতি লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
• এই মিশ্রণটি মুখের পাশাপাশি ঘাড়েও প্রয়োগ করা যায়।
• মিশ্রণটি লাগানোর পর ১৫-২০ মিনিট একেবারে ছেড়ে দিতে হবে শুকানোর জন্য। পরে নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলে পরিষ্কার জল দিয়েই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে মুখ।
উল্লেখ্য, ত্বকের উপর বর্তমান দীর্ঘস্থায়ী দাগ থেকে মুক্তি পেতে এই ফেসপ্যাক ভীষণভাবে কার্যকরী। এই প্যাকটি সকল ত্বকের জন্যই উপকারী। এটি ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতেও বেজায় সহায়তা করে থাকে।
৫) পেঁপে ও মধু:
• প্রথমে একটি পাত্রে অর্ধেক কেটে রাখা পেঁপে নিয়ে নিতে হবে।
• এরপর তার মধ্যে দুই টেবিল চামচ মধু নিয়ে ভালোভাবে ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।
• এরপর এই মিশ্রণ গোটা মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলে পরিষ্কার জল দিয়েই ধুয়ে নিতে হবে মুখ।
পেঁপেতে এনজাইম বর্তমান, যা ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে ত্বককে কোমল রাখতে সহায়তা করে থাকে। পাশাপাশি এটি ত্বককে দাগহীন রাখতে ও ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতেও সহায়তা করে। পাশাপাশি মধু ত্বকে এক আলাদা উজ্জ্বলতা ফুটিয়ে তোলে।