প্রয়াগরাজ: ঐতিহাসিক রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট (Allahabad High Court)। বিবাহ বিচ্ছেদের আগেই যদি স্ত্রী অন্য সম্পর্কে লিপ্ত হন তবে সেক্ষেত্রে প্রথপম পক্ষের সন্তানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবেনা মায়েদের। মঙ্গলবার (Tuesday) এমনটাই জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। কারণ, আদালত মনে করে যে একটি সন্তানের বেড়ে ওঠার পথে মায়ের স্নেহ, ভালবাসা ও উপস্থিতি না থাকলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে শিশুদের মনের ওপর।
রামকুমার গুপ্তর স্ত্রী সংযুক্তা গুপ্ত। বিবাহ বিচ্ছেদ না করেই অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাই ছেলে আনমোলের আইনি অধিকার পাওয়ার তিনি যোগ্য নন বলেই দাবী করেন তার স্বামী রামবাবু। সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। অপরিচিত ব্যক্তির ঘরে সন্তানের দায়িত্ব ও সুরক্ষার ভার দিতে নারাজ তিনি। তাই ছেলেকে মায়ের সাথে না পাঠিয়ে যেন তার নিজের কাছেই রাখা হয় সেটা নিশ্চিত করতেই আদালতের সাহায্য নেন রামবাবু।
তবে ওই ব্যক্তির আশঙ্কাকে যদিও তেমন আমল দেয়নি আদালত। বরং উল্টে বিচারপতি বলেন “সমাজ বাঁ আইনের চোখে বিবাহ বিচ্ছেদের আগে কোনও মহিলার অন্য সম্পর্কে জড়ানোটা অনেকেই সহজে মানতে পারেন না, কিন্তু সেক্ষেত্রে কোনও শিশুকে নিজের মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াটাও উচিত নয়।একটি শিশুর বেড়ে ওঠার পথে মায়ের মমতা ও সহচর্য না পেলে শিশুর মানসিকতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে”।
তবে রামকুমার গুপ্তের স্ত্রী সংযুক্তার দাবী স্বামী ও বাবা হিসাবে মোটেই সঠিক ভাবে দায়িত্বভার বহন করেননি। অনেকবারই বিয়ের পর থেকে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হতে হয় তাকে। অনেকদিন ধরে এ ব্যাপারে স্বামীর সাথে মানিয়ে চলার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি এবং অন্য সম্পর্কে যুক্ত হন। তবে স্বামীর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ এখনও হয়নি তার।
সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই রায় দিয়েছিল যে দ্বিতীয়বার বিবাহ করলেও প্রথম পক্ষের সন্তানের আইনি অধিকার বাবার পাশাপাশি মায়েদেরও সমানভাবে প্রাপ্য। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের আগে থেকেই কোনও মহিলা তার স্বামী, সংসার ছেড়ে আলাদা থাকতে শুরু করলে সেক্ষেত্রেও সন্তানের ওপর মায়ের আইনি অধিকার থাকবে কিনা তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই জট কাটিয়েই অবশেষে সমস্যার সমাধান দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।