শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ‘চৈত্র সেল’, ‘চৈত্র সেল’, ‘চৈত্র সেল’ এবারের জন্য এই ডাক গুলো বোধহয় আর শোনা যাবে না। চৈত্র মাস যেদিন শেষ হচ্ছে, আমাদের ভারতবর্ষ থেকে লকডাউন সেদিন উঠবে বলে এখনো পর্যন্ত জানা যাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যদি যায় তাহলে এই লকডাউন আরো বাড়ানো হবে কিনা জানা নেই। যাইহোক সেল থেকে বাজার করার স্বপ্ন টা আপাতত আপনার স্বপ্নই থেকে যাবে। চৈত্র সংক্রান্তিতে বসে চড়ক মেলা।
কত মানুষের রুটি-রোজগারের মেলাকে ঘিরে। এবারে সব বন্ধ। করণা বড়লোকদের জন্য বাড়িতে বসে নানান রকম নতুন রান্না করা, নতুন বই পড়া, গান-বাজনা করা, সিনেমা দেখে সময় কাটানো। আরে গরিব মানুষগুলো, যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের জন্য করোনা কোন করুনা করছে না! একবার ভেবে দেখুন তো, যে সমস্ত দোকানিরা এই সময় কয়েকটা পয়সা একটু বেশি লাভ করেন, তাদের কি অবস্থা। অনেকে তো এই সময় জিনিসপত্রের দাম একটু কম দেখে পুজোর কেনাকাটাও সেরে ফেলেন।
এবারে আপনি সেল থেকে কয়েকটা জামা বেশি কিনতে পারলেন না বলে হয়তো ঘরের মধ্যে থেকে কাঁদছেন বা মন খারাপ করছেন, কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো আপনার কেনাটাকাটায় যে মানুষগুলোর সংসারে একটু সুরাহা হয়, ছেলেমেয়েকে একটা ছোট্ট নতুন জামা কিনে দিতে পারে, সেই মানুষগুলোর কি অবস্থা! শুধু তাই নয় যে সমস্ত জায়গায় এই হাট-বাজারগুলো বসে সেখানে শুধু জামা কাপড়ের দোকানে নয়, এখানে কিনতে আসা মানুষরা সারাদিন ঘোরাঘুরির পরে ফুচকা, ঝালমুড়ি, তেলেভাজা, রোল, চাউমিন, মোগলাই ইত্যাদি রাস্তার খাবার খেয়ে থাকে।
একবার ভেবে দেখেছেন এই সমস্ত রাস্তায় বিক্রি করা খাবার দোকান গুলোর মানুষগুলোর কি অবস্থা? মুখ্যমন্ত্রীর কথা মিষ্টির দোকান গুলি আবার খুলেছে। কিন্তু এবারে নববর্ষের দিন কি সেই আগের মত হালখাতা করানো কিংবা দোকানে দোকানে নতুন ক্যালেন্ডার, ফুল, মিষ্টি দেওয়ার চল থাকবে! সত্যি কোন কিছুই জানা নেই, আমরা এই সময় একটা অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে কি হবে আমরা কেউ জানিনা।
করোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে চৈত্র সেলে। জানা নেই কবে আমরা এই ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হব। যুদ্ধ নয়, রক্তপাত নেই, গুলিবর্ষণ নেই একটা ভাইরাস কিভাবে গোটা বিশ্বকে আতংকিত করে তুলতে পারে তার সত্যি না দেখলে বিশ্বাস হতনা।