কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানোর মামলায় মমতা সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে আগামী তিন মাসের মধ্যে সমস্ত বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই সময়সীমার মধ্যে বাকি আর মাত্র দেড় মাস। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই অর্থ দফতর রাজ্য সরকারের সব দফতরের আর্থিক উপদেষ্টাকে তলব করল। তাদের নিয়ে আগামী শনিবার বেলা ১১ টার সময় বিধাননগরের নগরোন্নয়ন দপ্তরের শুভান্ন ভবনের কনফারেন্স হলে জরুরী বৈঠক হবে। এখনো অব্দি অর্থ দফতরের পক্ষ থেকে বৈঠকের বিষয়বস্তু অফিশিয়ালি জানানো না হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে সম্ভবত ওই দিন বকেয়া ডিএ মেটানোর কার্যপ্রণালী সম্বন্ধে আলোচনা হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আয় ব্যায় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা করা হবে। আসলে এই রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের জনমুখী প্রকল্প চলছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎ করেই অনেক প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে স্বভাবতই সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। একাধিক জনমুখী প্রকল্পে দীর্ঘদিন ভর্তুকি দিতে দিতে দান করেছে রাজ্যের কোষাগারে। তাই এই মুহূর্তে কোন সামাজিক প্রকল্পের কত টাকা খরচ হচ্ছে সেই নিয়ে আলোচনা হতে পারে আগামী শনিবারের বৈঠকে।
আসলে কলকাতার হাইকোর্টের রায়ের পর রাজ্য সরকার বকেয়া মহার্ঘ ভাতা না মেটানোর প্রস্তাব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেনি। তাই মনে করা হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের অনুযায়ী আগামী দেড় মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। আর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এই বকেয়া অর্থ দিতে গেলে যে ব্যাপক আর্থিক ধাক্কা আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে সিপিআই এর ভিত্তিতে বকেয়া ডিএ মেটাতে গেলে বড় অংকের টাকার প্রয়োজন। বর্ধিত হারে ডিএ দিতে রাজ্য সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। মনে করা হচ্ছে এমন বিশাল আর্থিক ধাক্কা কি করে সামলানো যায় সেই নিয়েই সমস্ত দফতরের আর্থিক উপদেষ্টাদের নিয়ে বৈঠকে বসবে অর্থ দফতর।