গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী ( Nachiketa chakraborty) কেরিয়ারের শুরু থেকেই জীবনমুখী গানের জন্য বিখ্যাত। তাঁর গানে সময় থমকে দাঁড়ায়। নিরাশাও বাঁচার কারণ খুঁজে পায় তাঁর সঙ্গীতে। কিন্তু নচিকেতার পিছু ছাড়ে না বিতর্ক। বরং বলা ভালো, নচিকেতাই ছাড়তে চান না বিতর্ককে। হয়তো সেই কারণেই এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার মঞ্চে মেজাজ হারালেন নচিকেতা। গত 27 শে ফেব্রুয়ারি ডেবরায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে গান গাইতে ওঠেন নচিকেতা। সেই সময় দর্শকদের মধ্যে একজন ব্যক্তি তাঁকে ‘নচিকেতা’ নামে সম্বোধন করলে তিনি মঞ্চ থেকেই ওই ব্যক্তিকে চড় মারার হুমকি দিয়ে বলেন, ভদ্রভাবে কথা বলতে। নচিকেতা বলেন, তিনি ওই ব্যক্তির বন্ধু নন বা তাঁর থেকে বয়সে ছোট নন। এরপর নচিকেতা ‘অন্তবিহীন পথে চলাই জীবন’ গেয়ে বুঝিয়ে দেন নচিকেতা আছেন নচিকেতাতেই। ইন্ডাস্ট্রিতে নচিকেতাকে সবাই ‘নচিদা’ নামে সম্বোধন করেন। ইতিমধ্যেই নচিকেতার এই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে।
এর আগে 28 শে জানুয়ারি বর্ধমান পৌর উৎসব মঞ্চে ছিল নচিকেতার অনুষ্ঠান। বরাবর নচিকেতার অনুষ্ঠান মানেই বিরাট জনসমাগম। সেই মঞ্চ থেকে তিনি নিজের তৈরী গান ‘আজকে যিনি তেরঙ্গাতে, কাল ভক্ত রামে’ গেয়েছিলেন। তাঁর এই গানটি বিখ্যাত ও বহুলচর্চিত। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক সময়ে নচিকেতার গাওয়া সেই গানের কথা নিয়েই সূত্রপাত হয়েছিল বিতর্কের।
এই গানটি গাওয়ার সঙ্গেই নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নচিকেতা কিছু অশালীন শব্দ ব্যবহার করে নচিকেতা বলেন, যাঁরা নিজেদের চরিত্রবান ভাবছেন, তাঁরা নিজেরা জানেন না, তাঁরা আসলে কি! নচিকেতা নিজেকে চরিত্রহীন বলেন এবং জানান এটাই তাঁর প্রেমে পড়ার কারণ। নচিকেতার বলা কথা নিয়ে বিতর্ক আরো জোরদার হয়ে উঠেছিল। জেলা বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি শুভম নিয়োগী (Shubham niyogi) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেলিব্রিটি এবং শিল্পীদের নিজেদের মর্যাদারেখার মধ্যে থাকা উচিত, বর্ধমান উৎসব এখন তৃণমূল উৎসবে পরিণত হয়েছে।
2000 সালে বাম আমলে বর্ধমান উৎসবের সূচনা হয়েছিল। দশদিন ধরে হয় জমজমাট বর্ধমান উৎসব। তৃণমূল আমলে বর্ধমান পৌরসভার উদ্যোগে আয়োজিত বর্ধমান উৎসবের নাম পাল্টে রাখা হয় ‘বর্ধমান পৌর উৎসব’। প্রত্যেক বছর সেলিব্রিটিরা এসে এই মঞ্চে নিজেদের বক্তব্য রাখেন। নচিকেতার বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস (prasenjit Das) বলেছেন, বাংলার মানুষ নিজেদের সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত। সুতরাং শিল্পীরা কি গান গাইবেন বা কি বক্তব্য রাখবেন, তা ঠিক করা বিজেপির কাজ নয়। তাছাড়া এটা বাংলার কালচার নয়। আপাতত বোঝা যাচ্ছে, নচিকেতার বক্তব্য নিয়ে বর্ধমানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই চাপান-উতোর চলতেই থাকবে। প্রকৃতপক্ষে চিরকেলে বিতর্কিত নচিকেতা জানেন, বিতর্ক সৃষ্টি করাও একটি শিল্প।