নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় গত সোমবার থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছে অসম সহ উত্তরপূর্ব ভারতে। কিন্তু অসমে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তা যে এতটা বিস্তৃত হবে তা ভাবেনি কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রক। সরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, অসমে বিজেপি সরকার থাকায় তারা কিছুটা আস্বস্ত ছিলেন বিক্ষোভ এতটা না ছড়ানোর ব্যাপারে। কিন্তু সেটাই তাদের কাছে বুমেরাং হয়ে ফিরলো।
অসমের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর যখন কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে সেনা নামালো ততক্ষণে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে সেখানে একজন মারা গিয়েছে। আর এই প্রাণহানির ঘটনাতেই সবচেয়ে অস্বস্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত অগস্টে কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পরেও সরকারের বিশেষ নজরদারি থাকায় কোনো নাগরিক বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে মারা যায়নি, সেখানে অসমে নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে মৃত্যু যে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথেষ্টই চাপে রেখেছে তা বলাই যায়।
আরও পড়ুন : অশান্তি থামাতে আরও কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
সরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে আগে থেকেই রিপোর্ট ছিল যে, এই বিল পাশ হলে অসমের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা গুলিতে বিলের বিপক্ষে বিক্ষোভ প্রদর্শন হতে পারে। তাই বিল পাশ করার সময়ে বিলেই জানানো হয়েছিল, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা গুলিতে এই বিল কার্যকর হবেনা। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরে এই বিষয় নিয়ে প্রচার চালানো শুরু হয় অনেক পরে। বিজেপির একাংশ মনে করছে বিলটি তাড়াতাড়ি পাশ হওয়ায় স্থানীয় ভাবে প্রচার করার সময় পাওয়া যায়নি।
তার জন্যই স্থানীয় আদিবাসীদের বোঝানো সম্ভব হয়নি, যে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়া অসমের ভূমিপুত্রদের আর একটি বিষয়ে চিন্তা ছিল, তাদের আশঙ্কা ছিল এই বিলটি পাশ হলে বাঙালি অর্থাৎ হিন্দু ও মুসলিম’রা অসমে সংখ্যাগুরু হয়ে পড়বে। তাদের সেই আশংকা মেটাতে সরকারের তরফে সঠিক সময়ই পাওয়া যায়নি। আর তার ফলেই এই বিক্ষোভ অসম জুড়ে।