“প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত”, বিধানসভায় কৃষি আইন প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিস্ফোরক মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বললেন, "আগে দিল্লি সামলান, তারপর বাংলায় আসবেন"
একুশে নির্বাচনের প্রাক্কালে এমনিতেই তৃণমূল ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে মতবিরোধ লেগেই থাকে। তারই মধ্যে কেন্দ্র সরকারের কৃষক বিরোধী কৃষি আইনের প্রতিবাদে কৃষকদের আন্দোলন সরগরম করে রেখেছে গোটা দেশের রাজনীতিকে। দুদিন আগে কৃষকরা দিল্লির পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে লালকেল্লায় গিয়ে ধুন্ধুমার বাধিয়ে দেয়। অবশ্য কৃষকদের এই আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গেরুয়া শিবির ও কেন্দ্রের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মীরা। তবে মমতা সরকার কৃষকবান্ধব হয়ে আজ বিধানসভা কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব আনে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রস্তাব আনার পর এই ধুন্ধুমার বেঁধে যায় বিধানসভায়। কি হয়েছিল আজ ঠিক?
রাজ্য সরকার আজ বিধানসভায় উপস্থিত থেকে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব আনেন। কেন্দ্রের নয়া তিনটি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করলে সেখানে বিজেপি বিধায়করা হই হট্টগোল শুরু করে দেয় ও জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে শুরু করে। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্র সরকারের অরাজকতাকে সামনে রেখে তোপ দেগে বলেন, দেশের পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রধানমন্ত্রী মোদির পদত্যাগ করা উচিত। অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন বিজেপি বিধায়ক বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। এর ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে এগোয়।
এদিন বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবী করলে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞা হঠাৎ করে জয় শ্রীরাম স্লোগান শুরু করে। তাকে সাতটায় আরো অনেক বিজেপি নেতারা। হট্টগোলের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে কেউ আন্দোলন করে তাকে সন্ত্রাসবাদি ঘোষণা করা হচ্ছে। আসলে সন্ত্রাসবাদি তকমা দিয়ে আন্দোলন কে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২৬জানুয়ারি দিল্লিতে যা হয়েছিল তা ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর বা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। তার দোষ দিয়ে কখনই কৃষকদের দেশদ্রোহী বা খলিস্তানি বলে আক্রমণ করা উচিত নয়।”
এছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিয়ে বিধানসভার ভাষণে বক্তৃতা দিতে গিয়ে পদত্যাগ করার দাবি তোলেন। এছাড়াও তিনি এদিন বলেছেন, “হয় এই তিনটি বিল প্রত্যাহার কর। নয় সরকার গদি ছাড়ো। দেশের পরিস্থিতি এখন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই এখন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।” এছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এদিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগে দিল্লিকে সামলান তারপর বাংলাকে সামলাতে আসবেন।” বিধানসভার বক্তব্য শেষে তিনি, “জয় জওয়ান, জয় কিষান, জয় হিন্দ ও জয় বাংলা স্লোগান দেন।”